শনিবার (০১ মে) সরকারি হিসাব মতে, ভারতে আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৯৯৩ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ৫২৩ জন। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫শ জনের বেশি মানুষের। এর আগে ২৮ এপ্রিল মারা যায় ৩ হাজার ৬৪৭ জন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী মৃত্যুর এই সংখ্যা জানা গেলেও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার ধারণা মৃত্যুর সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি। হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে অনেকেই বাড়িতে মারা যাচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবেশী দেশের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ভারতে তৈরি হওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনটির নাম গবেষকেরা দিয়েছেন ‘বি-ওয়ান-সিক্সসেভেনটিন’। গত অক্টোবরে এটি প্রথম শনাক্ত হয়।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং হেল্থ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে বিশাল সীমান্ত। যেকোনো সময় যে কোনোভাবে ভারতের এই ভয়াবহ ভেরিয়েন্টটি আমাদের দেশে ঢুকে যেতে পারে। যদিও ইতোমধ্যে সীমান্ত বন্ধ, বিমান বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হলেও আমরা চিন্তিত যে কিছু কিছু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ভারতে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরির কারণ হচ্ছে করোনার এই ধরনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগ্রাসী গতিতে মানুষকে সংক্রমিত করছে। সংক্রমণের ২/৩ দিন পরই ফুসফুস আক্রান্ত করছে, অক্সিজেন লেভেল নেমে যাচ্ছে। ইউকে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ভেরিয়েন্টের চেয়ে ভারতের এই ভেরিয়েন্টটি আরও দ্রুত ছড়ায় বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর গত কয়েদিন ধরে সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছে। সংক্রমণের শতকরা হার কমে ১০ ভাগের কাছে নেমে আসে। সেই তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত নিচে নামছে না। এখনও প্রতিদিন ৫০- এর বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
এ বিষয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, ভারতের ভেরিয়েন্ট নিয়ে আশঙ্কা আছে। কিন্তু আমাদের দেশের ভেতরের ভেরিয়েন্টটি নিয়েও তো এখনও আশঙ্কা দূর হয়নি। সংক্রমণ কমেছে এতে এখনই স্বস্তিবোধ করার মতো কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে, সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। যত বেশি সংক্রমণ হবে তত বেশি মৃত্যু বাড়বে। ভারতে এত সংক্রমণের কারণেই এত মৃত্যু। সারা বিশ্বের ভেরিয়েন্ট ভারতে চলে এসেছে। আমাদের এখানেও অনেকগুলো ভেরিয়েন্ট আছে। যত বেশি সংক্রমণ হবে ধরনেরও (ভেরিয়েন্ট) তত বেশি পরিবর্তন হবে।