ভারতে বেড়াতে গিয়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

ভারতে বেড়াতে গিয়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কাকার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আর নিজের দেশে ফেরা হলো না বাংলাদেশের নাগরিক দীপঙ্কর বিশ্বাসের। কাকার ঘরের ভেতরে থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই হাবড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

২৭ বছর বয়স্ক দীপঙ্করের বাড়ি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার হিজলা থানার কালিকাপুর এলাকায়। জন্মের পর কোনোদিনই নিজের একমাত্র কাকা-কাকিকে দেখেননি তিনি। তাই প্রথমবার তাদের দেখতে ভারতে এসেছিলেন। তাও লকডাউনের আগেই।

জানা গেছে, গত ২২ ফ্রেব্রুয়ারি বৈধ ভিসা নিয়ে রাজ্যটির উত্তর ২৪ পরগণা জেলার হাবড়া থানার ডহরথুবা এলাকায় তার কাকার বাড়িতে বেড়াতে আসেন দীপঙ্কর। কিছুদিন এখানে থেকে ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত মার্চ মাসে করোনা মহামারি শুরু হওয়ায় এই সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত জুড়েই জারি করা হয় লকডাউন। ফলে দীর্ঘ লকডাউনে ভারতেই আটকে পড়েন তিনি।

বুধবার রাতেও কাকা-কাকির সাথে বাড়িতেই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেন দীপঙ্কর। এরপর ঘুমানোর জন্য ঘরে চলে যান তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় তাকে ডাকতে যান কাকা প্রিয়লাল বিশ্বাস। সেখানে টিনের তৈরি একচালা ঘরের ছাদে বাঁশের সাথে দীপঙ্করকে কাপড়ের ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখেন তিনি। ছুটে আসেন তার কাকি গীতা বিশ্বাস। এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। প্রতিবেশিদের ঘটনাটি জানানো হয়। খবর দেওয়া হয় হাবড়া থানাতেও। পরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। এলাকাবাসীর সহায়তায় ঘরের বন্ধ দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত যুবকের কাকি গীতা বিশ্বাস জানান, ফোনে বাংলাদেশের এক তরুণীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলতে শোনা যেত দীপঙ্করকে। তবে এ বিষয়ে দীপঙ্কর তাদের কাছে কিছু স্বীকার করেননি। ফলে সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে দীপঙ্করের বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে খবর দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে হাবড়া থানা। অন্যদিকে, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটিকে পাঠানো হয়েছে বারাসাত জেলা হাসপাতালে।

দীপঙ্করের কাকা প্রিয়লাল বিশ্বাস জানান ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ থেকে আমার ভাতিজা আমাদের বাড়িতে আসে। ফোনে যোগাযোগ করে প্রথমবার ভারতে আমাদের বাড়িতে আসে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই তাকে ঘরের মধ্যে গলায় কাপড় লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখতে পাই। আমি বাংলাদেশে ভাইকে ঘটনাটি জানিয়েছি।’

তবে ঠিক কী কারণে এই মৃত্যু, তা বলতে পারেননি তার কাকা। তিনি জানান ‘তাকে নিয়ে কোনো অশান্তি ছিল না। তবে ফোনে তাকেই প্রায়ই কথা বলতে শোনা যেতো।’

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন