‘অনেক নারী নিজেরাই নিজেদের দুর্বল ভাবেন’

‘অনেক নারী নিজেরাই নিজেদের দুর্বল ভাবেন’
‘আলাদাভাবে কোনো বিশেষ দিন আমি বিশ্বাস করি না। যদি সম্মান দেওয়ার হয়, তাহলে একদিনের জন্য কেন সম্মান দেবে? এটা তো প্রতি দিনের বিষয়! তবে হয়তো সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ দিনের কনসেপ্টটা সেট করা হয়েছে, যেমন- ভালোবাসা দিবস বা নারী দিবসসহ অন্য বিশেষ দিনগুলো।

সুনেরাহ বলেন, ‘অনেকে নারীদের দুর্বল ভাবেন, নরম-সরম ভাবেন। আমি সবসময় এই বিষয়টি ভাঙার চেষ্টা করেছি- বলেছি নারীরাও শক্তিশালী, সবাই সমান। সেটা আমার কাজের মাধ্যমে হোক, আমার দৈনন্দিন জীবন হোক কিংবা আমার ব্যবহার বা কথাবার্তা দিয়ে হোক। আমি সব দিক দিয়ে চেষ্টা করি অন্যদের সঙ্গে সমান তালে চলতে। প্রচলিত ধারনাটা ভেঙে বোঝাতে চেষ্টা করি-নারীরা পুরুষদের সমান, কারো থেকে নিচে না বা দুর্বল নয়। ’পরিবার থেকে কখনো নারী পুরুষের ভেদাভেদের শিক্ষা পাননি বলে জানান ‘ন ডরাই’খ্যাত এই অভিনেত্রী। তার ভাষ্যে, ‘আমাকে কিন্তু ছোটবেলায় পরিবার থেকে কখনো শেখানো হয়নি- নারী পুরুষ আলাদা! স্কুল থেকে বের হওয়ার পর বাইরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমি জানতে পেরেছি-নারী পুরুষকে অনেকে আলাদা চোখে দেখেন। ’পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে সবসময় কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সুনেরাহ। নিজের কাজ দিয়ে কাছের মানুষদের গর্ববোধ করাতে চান তিনি। তবে যেসকল নারী নিজেদের দুর্বল ভাবেন, তাদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  সুনেরাহ বিনতে কামাল বলেন, ‘আমি অনেক নারীকে দেখেছি, যারা নিজেরাই নিজেদের দুর্বল ভাবেন। তারা একে অপরকে বলতে থাকেন, আমরা দুর্বল। তখন দেখা যায় পুরুষরা সেভাবেই তাদের মূল্যায়ন করেন। আমি মনে করি নারীদের নেগেটিভ কথাবার্তা বা চিন্তা ত্যাগ করতে হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। কাজ করে যেতে হবে, তাহলেই যে কেউ একদিন সফল হবেনই। ’নারী পুরুষের পার্থক্যকারীদের সবসময় অপছন্দের দৃষ্টিতে দেখেন জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘যারা নারী পুরুষের পার্থক্য করেন, তাদের আমি একদমই সাপোর্ট করি না। অনেক সময় যদি দেখি কোনো নারী বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন তখন আমি তার পাশে গিয়ে দাঁড়াই এবং প্রতিবাদ করি। কেউ যদি আমার শত্রুও হন, তখনও আমি এই বিষয়টি নিয়ে তার পাশে থাকি। সুন্দরভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে বিষয়টির বিরুদ্ধে কথা বলি। তবে খারাপভাবে না, খুব সুন্দর করেও কিন্তু মানুষকে বোঝানো যায়। ’অনেক নারীর মানুষ হিসেবে যে অধিকারগুলো পাওয়া উচিৎ, সেগুলো পায় না। সে প্রসঙ্গে সুনেরাহ বলেন, ‘অনেক সময় পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে না, কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু আমি মনে করি আশা ছাড়া উচিৎ না। ফাইট করে যেতে হবে। ধরুন, রাস্তায় জ্যাম দেখে গাড়ি থেকে নেমে আপনি হাঁটা শুরু করলেন, দেখবেন একটা পর্যায়ে আপনি গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু যদি দাঁড়িয়ে থাকেন বা ফিরে যান-তাহলে কিন্তু আপনি ব্যর্থ!নারীদের কাজ করতে বা নিজের ইচ্ছা মতো চলতে গেলে অনেক সময় নানা সমালোচনা শুনতে হয়। সুনেরাহকেও এসবের মুখোমুখি হতে হয়। তবে তিনি এখন এই বিষয়গুলোকে পাত্তা দেন না। এই তারকা বলেন, ‘অনেক সময় ফেসবুকে ছবি দিলেই দেখি অনেক অরুচিকর মন্তব্য করেন, আমার ইচ্ছা হয়েছে আমি ছবি দিয়েছি, কারো ভালো না লাগলে এড়িয়ে যাক। এভাবে অন্যকে অসম্মান করার কোনো মানে হয় না। এগুলো নিয়ে আগে অনেক মন খারাপ হতো, কিন্তু এখন আর গায়ে লাগে না। ’ সুযোগ পেলে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন সুনেরাহ। সব বাধার দেয়াল ভেঙে এগিয়ে যাওয়াই তার একমাত্র লক্ষ্য।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন