জনসম্মুখে টিকা নিতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

জনসম্মুখে টিকা নিতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক :তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র কোনো কোনো নেতা গোপনে টিকা নিয়েছেন। আমি অনুরোধ জানাবো, আপনারা এভাবে গোপনে লুকিয়ে লুকিয়ে না নিয়ে, আপনারা জনসম্মুখে যেভাবে কথা বলেন, ঠিক সেভাবে টিকা গ্রহণ করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে লজ্জা নিয়ে টিকা নেবেন না। তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বদ্ধপরিকর। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে টিকা নিয়ে বিরূপ প্রচারণা চালানো হয়েছে। যারা বিরূপ প্রচারণা চালিয়ে ছিলেন, তারা এখন টিকা গ্রহণ করছেন এবং অন্যদেরকেও প্রদানের জন্য ও গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশগুলো নিজেদের মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াচ্ছে, আন্তঃসংযোগ বাড়াচ্ছে। একটা সময় ইউরোপের এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে ভিসা লাগতো, বর্তমানে সেটি আর লাগে না। প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ছিল। এখন সেটি ২৬ সদস্যবিশিষ্ট। তারা দেখেছে, তাদের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি না করে, রাজনৈতিক সীমারেখা দিয়ে জনগণকে আবদ্ধ রেখে এবং তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে দূরত্ব রেখে লাভ হয় না। তারা আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর ফলে তাদের জিডিপি গ্রোথ বেড়েছে এবং কর্মসংস্থান বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু যে সমস্ত চুক্তি করে গিয়েছিলেন, তার কিছুটা হলেও আমাদের মধ্যে আছে, আন্তঃসংযোগ কিছুটা হলেও স্থাপিত হয়েছে। ভারতের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে দেশ যখন উল্টো পথে হাঁটা শুরু করলো, তখন ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে ভোট নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। সেই কারণে আমাদের ক্ষতি হয়েছে, এই অঞ্চলের ক্ষতি হয়েছে। দেশে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আছে, যাদের মূল বিষয় হচ্ছে ভারত বিরোধিতা। যখন নির্বাচন আসে তখন ভারত বিরোধিতাকে সামনে নিয়ে আসে। অথচ ভারত আমাদের দেশের তিন দিকে পরিবেষ্টিত। যে দেশ আমাদের সংগ্রামের সময় রক্ত ঝরিয়েছে, যাদের সহযোগিতা ছাড়া ৯ মাসের মধ্যে মুক্তির সংগ্রামে আমাদের জয় লাভ করা সম্ভব ছিল না, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাদের যে কূটনৈতিক তৎপরতাÑ এটি ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা সম্ভব ছিল না। সে দেশের সঙ্গে বিরোধিতা করে আমাদের দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। তারা এটি বুঝেও বুঝে না। কিংবা রাজনীতির স্বার্থে তারা এই অপরাজনীতি করেন। ভুল, অসত্য ও তথ্যনির্ভর নয়- এমন সংবাদ যেন বাংলাদেশের মিডিয়াতে প্রকাশ না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এমন কোনো সংবাদ পরিবেশিত যেন না হয়, যেটি দু’দেশের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কিছুদিন আগে কিছু ভুল ও অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। একইসঙ্গে শুধু এটি আমাদের দেশে পরিবেশিত হয়েছে তা নয়, ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তা পরিবেশিত হয়েছে। যেটি দুই দেশের মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। যখন মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তখন দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। করোনা নিয়ে ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশিত হলো। আর সেটির সূত্র ধরে আমাদের দেশের সমস্ত গণমাধ্যম যেভাবে সংবাদ পরিবেশন করলো, অথচ পুরো তথ্যটা ছিল ভুল এবং মিথ্যা। আর সেটি যে ভুল সংবাদ ছিল, তা প্রমাণ করতে ভারতের স্বাস্থ্য সচিবকে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউটকে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়েছে এবং আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ আমাদেরকেও কথা বলতে হয়েছে। অথচ দেখা গেল, চুক্তি অনুযায়ী যে সময়ের মধ্যে করোনার টিকা আসার কথা, সে সময়ের মধ্যে এসেছে তো বটেই, একইসঙ্গে ভারত আমাদের ২০ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে। এটিই হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী বন্ধনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা, লেখক ও সাংবাদিক হারুন হাবীব, সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ