নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল আমাদের ইতিহাসের কথা বলে। এটি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক ও বাহক হয়ে উঠবে আশা করি। বঙ্গবন্ধু আমাদের প্রাণে ও হৃদয়ে আছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গতকাল শনিবার দুপুরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ ম্যুরালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। উপজেলা পরিষদের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রাণের দাবিতেই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শুধু বর্তমান প্রজন্ম নয়, ভবিষ্যত প্রজন্মও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে এখন এমন কোনো খাত নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চারিদিকেই এখন উন্নয়নের জোয়ার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে স্বপ্ন বাস্তবায়নে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী, ভাইস-চেয়ারম্যান নূর হোসেন, নারী ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাশ ট্রান্সফারের আওতায় সব দরিদ্রকে আনা হবে : এদিকে গতকাল শনিবার সকালে ‘কোভিড-১৯ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও স্বাস্থ্য অধিকার’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় তিনি বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ক্যাশ ট্রান্সফারের মাধ্যমে দরিদ্রদের মাসে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে যারা এখনও মাসিক এই টাকা পান না এবং করোনায় যারা দরিদ্র হয়েছেন, তাদেরকেও এর আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি তাদেরকে বাড়তি টাকাও দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, সামাজিক সুরক্ষা আমাদের অনেক কাজের মধ্যে একটা ভালো কাজ। বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য হটাবার কথা আমরা বলি, এর জন্য মূল অস্ত্র প্রয়োগ করতে নানা কারণে পারছি না। এই ক্যাশ ট্রান্সফার, যেটা আমরা গরিব মানুষের হাতে পৌঁছে দিই। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা করে মাসে দিই। এতে তাদের বিরাট উপকার হয়। আমার প্রতিবেশীরাও উপকার পায়। সরকার বোধহয় এবার স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে যারা বাকি ছিলেন এবং করোনার কারণে যারা নতুন দারিদ্র্য হয়েছেন, তাদেরকে বাড়তি টাকা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। সবাইকে এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তি যে, টাকা বাড়ালে কাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হতে পারে। আমি তাতে একমত। তবুও ৫০০ বা ৭০০ টাকা একদম কমেরও কম। এটাকে মাসে ১ হাজার টাকা করা গেলে ভালো হতো। যাই হোক, মাসে ১ হাজার টাকা করা এটা আমার প্রস্তাব। তিনি বলেন, প্রথম দিকে কিছু সমস্যা ছিল। মিস ডিরেকশন ছিল, মিস গাইড ছিল- এগুলো এখন কমে গেছে। এখন মোটামুটি গ্রামের লোকেরা সচেতন। জনপ্রতিনিধিরা আগের তুলনায় দক্ষ। এটা আরও বাড়ানো দরকার বলে আমি মনে করি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য আগামী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বড় বরাদ্দ ধরা আছে। আমি এখানে যতদিন কাজ করছি, এ খাতে যেন আরও বেশি করে অর্থ জোগান দেয়া যায়, আমার অবস্থান থেকে কাজ করে যাবো। কারণ আমি জানি, প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের প্রতি বেশ দরদ আছে। দায়িত্ববোধ আছে, দায়বোধও আছে। আমার বিশ্বাস, ভালো প্রকল্প নিয়ে গেলে আরও বেশি করে অর্থ আমরা এখানে নিয়ে আসতে পারবো। বেশি করে টাকা আনলে দারিদ্র্যকে আমরা শক্ত করে আক্রমণ করতে পারবো। ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) ও এসএসডি’র যৌথ উদ্যোগে সেমিনার আয়োজন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। অনলাইন সেমিনারে ডিজেএফবি’র সভাপতি হুমায়ূন কবীর, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, সহসভাপতি হামিদ-উজ-জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন আব্দুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ ডিজেএফবির অন্য সদস্যরা অংশ নেন।