ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে হত্যার করে নিহতের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম। আজ বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক বলেন, দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রী খুনের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই রায়নুল ইসলাম জড়িত। তিনি ১৬১ ধারায় সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সেখানে রায়হানুল বলেছেন, সে বেকার থাকায় বিভিন্ন সময়ে তার ভাবি সাবিনা খাতুন খোটা দিত। এতে সে বিরক্ত হয়ে ভাবিকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাতে ভাবি ও তার দুই সন্তানকে কোকের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান।
এরপর রাতে বাড়িতে টিভি দেখতে থাকলে রাত একটার দিকে তার বড় ভাই শাহিনুর তাকে কারেন্ট বিল উঠছে জানিয়ে বকাঝকা করেন। এতে সে শাহিনুরের ওপরও ক্ষিপ্ত হন। আর তাৎক্ষণিকভাবে তার ভাই শাহিনুরকেও হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকেও ঘুমের ওষুধ খাওয়ান।
পরে রাত ৩টার দিকে প্রথমে ভাই শাহিনুরের হাত-পা বেঁধে জবাই করে হত্যা করেন। এরপর পাশের ঘরে থাকা ভাবিকেও চাপাতি দিয়ে জবাই করেন। এসময় ভাবির গোঙানির শব্দে ভাতিজা ও ভাইজি জেগে গেলে তাদেরও হত্যা করে রায়নুল।
একই পরিবারের চারজনকে হত্যার পরে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে রায়হানুল পার্শ্ববর্তী পুকুরে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত চাপাতি ফেলে দেন। আর সেখান থেকে গোসল করে বাড়িতে ফিরে আসেন।
খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাক (২৮), আব্দুল মালেক (৩৫) ও আসাদুল ইসলামকে (২৭) আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই হত্যার ঘটনায় তাদের মধ্যে কেউ সম্পৃক্ত আছে কিনা সেটি জানার জন্য। তবে এ পর্যন্ত তাদের কাউকে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সিআইডি’র পুলিশের এসপি আনিছুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ভোররাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে একই পরিবারের চার জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন, শাহিনুর রহমান, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি ও মেয়ে তাসনিম।