সমাচার ডেস্ক: রাজশাহীর তানোর উপজেলায় ৩৫ ফুট গভীর একটি গর্তে পড়ে গেছে দুই বছরের এক শিশু। ঘটনার আট ঘণ্টা পরও শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব না হওয়ায় গর্তে অক্সিজেন দিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।
বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনার পর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট।
শিশুটিকে জীবিত রাখতে পাইপের মাধ্যমে গর্তে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলে জানান রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস উপ-পরিচালক দিদারুল আলম।
গর্তে পড়ে যাওয়া সাজিদ হোসেন ওই গ্রামের রাকিবুল ইসলামের ছেলে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, আট ইঞ্চি ব্যাসার্ধের সরু গর্ত দিয়ে মাটির ৩৫ ফুট গভীরে শিশুটি পড়ে গেছে। ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিমসহ অ্যাম্বুলেন্স।
শিশুটির মা রুনা খাতুন বলেন, “দুই শিশুকে নিয়ে ওই মাঠে ধানগাছের খড় নিতে যাচ্ছিলাম। এ সময় সাজিদকে কোল থেকে নামিয়ে দেই। সে আমার পেছনে পেছনে হাঁটছিল। পরে পেছনে তাকিয়ে দেখি ছেলে নেই। এরপর দেখি গর্তের ভেতর থেকে মা মা বলে ডাকছে।”
কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, গ্রামের পাশের এ জমিটির মালিক কছির উদ্দিন নামের এক কৃষক। এক বছর আগে কছির উদ্দিন তার জমিতে সেচের জন্য একটি সেমিডিপ নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩৫ ফুট বোরিং করার পর সেখানে পানি পাননি। তাই নলকূপ বসানো হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দিদারুল আলম বলেন, “প্রথমে স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। পরে তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সদর স্টেশনের তিনটি ইউনিট গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে।
“এরপর ক্যামেরা পাঠিয়ে শিশুটির অবস্থান ৩৫ ফুট নিচে নির্ণয় করা হয়। শিশুটিকে জীবিত রাখতে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। শিশুটিকে উদ্ধারে গর্তের পাশে স্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করা হচ্ছে।”
শিশুটি জীবিত আছে কি-না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান বলেন, “ঘটনাস্থলে মেডিকেল টিমসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মাটি খনন যন্ত্রের প্রয়োজন হওয়ায় দ্রুত সেটিও ব্যবস্থা করা হয়। শিশুটিকে উদ্ধারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
জমিতে এ ধরনের গর্ত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথাও বলেছেন ইউএনও নাঈমা খান।
সমাচার/এমএএন