আরিফুল ইসলাম আরিফ,নীলফামারী : নীলফামারীতে গত কয়েকদিন ধরে ক্রমান্বয়েই কমছে তাপমাত্রা। বিকেল থেকে শুরু করে রাতের শেষ ভাগ পর্যন্ত বৃষ্টিরমত পড়ছে কুয়াশা। সারা দিনে দেখা মিলছে না সুর্যের। হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা আর ঝাঁঝালো বাতাশে প্রায় অচল করে দিয়েছে এ অঞ্চলের জনজীবন। এ আবহাওয়া শরীরে মানিয়ে নিতে না পেরে কাজেও যেতে পারছে না খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। ফলে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে ব্যহত হচ্ছে বিমান চলাচল। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলচল করছে যানবাহন গুলো।
নীলফামারী সদর উপজেলার চৌরঙ্গী মোড়, বদিয়ার মোড়, বড় বাজার, গাছবাড়ি, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল এবং ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীভিত্তিক গ্রামীণ এলাকা যেমন বাইশ পুকুর, পাগল পাড়া, পূর্ব চাতনাই চর খোড়িবাড়ি, বাবুরহাট, টুনিরহাট পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা, সাথে ঝাঁঝালো ঠান্ডা বাতাস আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে না পেরে হোটেল রেস্তোরায় চা আড্ডায় অলস সময় পার করছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।
কথা হয়, জেলার ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট এলাকার কিছু নিম্ন আয়ের মানুয়ের সাথে, তারা বলেন “গত কয়েকদিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। হাঁড় হিম করা ঠান্ডা ঝাঁঝালো বাতাশ আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিার মত কুয়াশায় মাঠে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে”।
ডিমলা বাবুরহাট এলাকার ভ্যান চালক নুরুল ইসলাম বলেন, “এ আবহাওয়ায় গত দুই দিন ধরে ভ্যান নিয়ে বাহিরে আসতেই পারিনি। পরিবারের ভরণ পোষনের জন্য আজ বাহির হলাম, কিন্তু এই হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডায় বাজারে তেমন লোকজন নাই”।
নীলফামারী বাস টার্মিনাল এলাকার দূরপাল্লার বাসচালক স্বপন আহমেদ বলেন, “ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন”।
যোগাযোগ করা হলে, সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আজ (শুক্রবার) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস”।
জানতে চাইলে, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, “নীলফামারী জেলা হিমালয় পর্বতমালার কাছাকাছি অবস্থিত। তাই এই হাড় হিমকারী শৈত্যপ্রবাহ নীলফামারীর জনজীবনে ব্যাপকভাবে আঘাত হেনেছে। আমরা ইতিমধ্যেই জেলার ছয়টি উপজেলার শীতার্ত দরিদ্র মানুষের মধ্যে ৪০,০০০ কম্বল বিতরণ করেছি। আমি আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও কম্বল বিতরণ করব”।
নীলফামারীর প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের সাথে জড়িত, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতাংশ নিম্ন আয়ের। এই হাঁড় হিমকরা ঝাঁঝালো ঠান্ডায় চরম ভাবে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে তিস্তা নদীভিত্তিক এলাকায় এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।