সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নে MRK, JSB ও SBS ইটের ভাটায় কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না মালিকরা। ইটভাটার ভিতরেই অবৈধভাবে স’মিল বসিয়ে কাঠ কেটে পোড়ানো হচ্ছে। ফলে দুষিত হচ্ছে পরিবেশের উপর। বিলীন হয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির বৃক্ষ। এছাড়াও কৃষি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ চলছে অবাধে। এসব ইটভাটা নদীর পাশে হওয়ায় বছরের পর বছর প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে ভাটার মালিকরা। শুধু MRK,JSB এবং SBS ইটভাটাই না, এর পাশাপাশি রয়েছে আরও কয়েকটি ইটভাটা। সব ইটভাটার ভিরতেই একই দৃশ্য দেখা মিলে। আর এসব ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, গ্যাস ও ধূলয় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজনও। এসব ইটভাটা সরকারি অনুমোদন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
এছাড়াও পাঁচখোলা ইউনিয়নের পুরানতন ফেরিঘাট এলাকাজুড়ে রয়েছে আরও একাধিক ইটভাটা। এসব ইটভাটার বেশির ভাগই স্থাপন করা হয়েছে ফসলি জমি বা এর পাশ ঘেঁষে। এতে করে পরিবেশ হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে এসব ইটভাটার মালিকরা। আর এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন একেবারেই নিবর দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে, তাঁরা নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হয়েছে।
মাদারীপুরে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি খান মোঃ শহিদ বলেন, এসব ইটভাটা পরিবেশের পাশাপাশি কৃষি জমির ক্ষতি করছে। এ অবস্থায় জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, ইটভাটার কালো ধোয়ার কারনে যেমন ফসল উৎপাদন কম হচ্ছে, তেমনি দিন দিন ফসলি জমিও কমে যাচ্ছে। তাই পরিবেশ ও ফসলি জমি রক্ষার্থে এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমরা এর মধ্যেই কয়েকটি ইটভাটায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করেছি। এছাড়া ইটভাটা চালাতে কিছু বিধি নিষেধ মানতে হয়, যারা এই বিধিনিষেধ মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা প্রকাশ্যে কাঠ পোড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে মাদারীপুর জেলায় ৭৬টি ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছে মাত্র ৬টির।