মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:মাদারীপুরের কালকিনিতে বিতর্কিত সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারের বদলির খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ওই কর্মকর্তার বদলির খবরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) পক্ষে নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। এতে তিনি চরম তোপের মুখে পড়ে পোস্টটি ডিলেট দিয়ে দেন।শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) তিনি নতুন পোস্ট দিয়ে দেশবাসীর ক্ষমা চেয়েছেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও একই উপজেলায় প্রায় সাত বছরের চাকরি জীবনে তার কর্মকান্ড নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগে তাকে বদলি করা হয়েছে। অপরদিকে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বদলির আদেশ হয়েছেন বলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কর্তৃপক্ষ।
মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ০৩ ডিসেম্বর কালকিনিতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন সন্দীপন। একই স্থানে কোনো কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি সময় চাকরি করার ব্যাপরে বিধান থাকলেও তিনি নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে উপর মহলকে ম্যানেজ করে প্রায় ৭ বছর যাবত একই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ সুযোগে তিনি জাটকা শিকার বন্ধকালীন সরকারি খাদ্য সহায়তা হিসাবে প্রতি মাসে জেলে প্রতি ভিজিএফের চাল বিতরনের তালিকা তৈরী করা, বিভিন্ন প্রকলল্পের মাধ্যমে পোনা বিতরন এবং দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ছাগল ও ছাগলের জন্য ঘর বিতরণের ঘটনায় ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন।তবে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইসকনের কর্মকান্ডের পক্ষে সন্দীপন তার নিজের ফেসবুকে আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন।স্ট্যাটাস দেওয়ার পর আলেম সমাজসহ স্থানীয় সাধারন জনগনের মাঝে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন। এ ঘটনার পরে রবিবার (০১ ডিসেম্বর) মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার বদলির আদেশ প্রদান করেন। তার বদলির খবরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয় সাধারণ জনগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বিতর্কিত মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারের সাত বছরের কর্মকান্ড ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ। তার বদলি হয়েছে তাই আমরা মিষ্টি বিতরণ করছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হাদিউজ্জামান বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিজালক মো. জিল্লুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সন্দীপনের বদলির আদেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ইসকনের কর্মকান্ড নিয়ে সন্দীপন তার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এ নিয়ে আলেম সমাজসহ স্থানীয় লোকজনের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে মৎস্য কর্মকর্তার বিষয়টি আমি কর্তপক্ষকে অবগত করি। তবে তার বদলির আদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে আমাকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে।