কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তৌসিফুল করিম রাফিকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে হ্নীলা দরগাহ পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গিয়াস উদ্দিন জানান, দরগাহ এলাকায় অভিযান চলাকালে রাফিকে ধাওয়া করে আটক করা হয়। তার হাতে থাকা নীল রঙের শপিং ব্যাগ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি এবং ৪০ রাউন্ড শটগানের গুলি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে, রাফি তার বাবা রেজাউল করিমের নির্দেশে প্রবাসী নুরুল আমিনের বাড়ির পেছনে অস্ত্র মজুদ করতে যাচ্ছিল।
পুলিশ আরও জানায়, রাফির বাবা রেজাউল করিম একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার নির্দেশেই এ অস্ত্র মজুদ করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার রাফিকে আদালতে হাজির করলে তাকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, রাফির পরিবার এবং প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সাফিদা পুলিশের দাবিকে ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন। সাফিদা অভিযোগ করেন, মধ্যরাতে পুলিশ তার ঘরে প্রবেশ করে আলমারিতে অস্ত্র পাওয়ার নাটক সাজায়।
রাফির পরিবার শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছে, রাফি একজন মেধাবী ছাত্র এবং তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে। তাদের বক্তব্য, “যদি রাফির বাবা অপরাধী হন, তবে তার শিশুকে কেন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে?”
রাফির স্কুল শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, রাফি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তিনি ২০২১ সালে হ্নীলা প্রি ক্যাডেট স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে ড. গাজী কামরুল ইসলাম বৃত্তি এবং হ্নীলা একাডেমি বৃত্তি লাভ করেন। ২০২২ সালে ৫ম শ্রেণীতে জি এইফ এইচ বৃত্তি অর্জন করেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। তাদের বক্তব্য, “পিতার অপরাধের দায়ে একটি শিশুকে অপরাধী বানানো ন্যায়সংগত নয়।” অনেকেই এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
একটি মেধাবী স্কুল ছাত্রকে নিয়ে এমন বিতর্কিত ঘটনা টেকনাফ এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।