বগুড়া প্রতিনিধি::: র্যাব-১২, সিপিএসসি, বগুড়া এর অভিযানে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ক্লুলেস উম্মে সালমা খাতুন(৫০) হত্যা মামলার আসামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার। সিপিএসসি, র্যাব-১২, বগুড়া কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ এহতেশামুল হক খান আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায সাংবাদিক সন্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন গত ১০ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানাধীন জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে নিজ বাসায় গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুন(৫০), স্বামী-আজিজুর রহমান, সাং-জয়পুরপাড়া, থানা-দুপচাঁচিয়া, জেলা-বগুড়াকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজের ভিতর ঢুুকিয়ে রাখে। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় জনবহুল এলাকায় স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী শিক্ষক আজিজুর রহমান(৫৬) ভাইস প্রিন্সিপাল, দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা মসজিদের খতিব এর বাড়িতে হত্যাকান্ড এবং হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজের ভিতর রাখার মত নৃশংসের ঘটনায় উক্ত এলাকায় রীতিমতো ডাকাতি সহ হত্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ডটি বগুড়া জেলাসহ সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং দেশের সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ঘটনা জানার পরে র্যাব-১২, বগুড়া দ্রুত ঘটনাস্থল (ক্রাইম সিন) পরিদর্শন করে এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ছায়া তদন্ত সহ অভিযান পরিচালনা করে। এই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে র্যাব-১২, বগুড়া এর একটি আভিযানিক চৌকস দল অদ্য ইং ১২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ রাত ০০.১০ ঘটিকার সময় হত্যাকারী সন্দেহে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ভিকটিমের ছোট ছেলে মোঃ সাদ বিন আজিজুর রহমান(১৯), পিতা-আজিজুর রহমান, সাং-জয়পুরপাড়া, থানা-দুপচাঁচিয়া, জেলা-বগুড়াকে কাহালু থানার অন্তর্গত পাঁচপীর আড়োবাড়ী এলাকায় জনৈক মোঃ রমজান মোল্লা (আসামীর দাদা) এর বাড়ি হতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে। গ্রেফতার পরবর্তী তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, উম্মে সালমা খাতুন(৫০) এর সাথে আসামী মোঃ সাদ বিন আজিজুর রহমানের হাত খরচের টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিলো এবং বাসা থেকে প্রায় প্রতিদিনই ৫০০-১০০০ টাকা হারিয়ে যেতো। ঘটনার দিন সকালে তার মা ভিকটিম উম্মে সালমা খাতুন(৫০) এর সাথে হাত খরচের টাকা নিয়ে কথার কাটাকাটি ও বাকবিতন্ডা হয়। পরে আসামী রাগ করে সকালের নাস্তা না খেয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসায় ক্লাস করার নিমিত্তে চলে যায়। মাদ্রসায় সকাল ১১.০০ ঘটিকায় ক্লাসের বিরতি হলে মাদ্রাসার আশপাশ এবং তার বাসার কাছাকাছি এলাকায় ঘুরে বেড়ায় এবং অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় আসামী বাসায় প্রবেশ করে দেখতে পান যে, তার মা ভিকটিম উম্মে সালমা খাতুন(৫০) বাসায় বসে একা বটি দিয়ে মিষ্টি কুমড়ার তরকারি কাটাকাটি করছিলো। এমতাবস্থায়, আসামী পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার মায়ের পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মা বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে ভিকটিমের হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নীচে তরকারি কাটার বটি লেগে হালকা কেটে যায়। পরে আসামী তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ভিকটিমের নাক-মুখ দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে ভিকটিমের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে হত্যা নিশ্চিত করে।
মৃত্যু পরবর্তীতে আসামী মোঃ সাদ বিন আজিজুর রহমান(১৯) ভিকটিম উম্মে সালমা খাতুন এর দুই হাত ভিকটিমের ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতর রেখে ফ্রিজের ঢাকনা লাগিয়ে দেয়।ঘটনাটি ডাকাতির ঘটনা হিসেবে সাজানোর জন্য আসামী বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে তার বাবা এবং মায়ের বেডরুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ মেরে কুড়াল সেখানে রেখে বাসার মেইন গেইটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে আসামী নিজেই আবার মেইন গেটের তালা খুলে বাসায় প্রবেশ করে তার বাবা আজিজুর রহমান(৫৬) (ভাইস প্রিন্সিপাল, দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা) কে ফোন করে জানায়