চসিক নির্বাচন আগামীকাল অর্ধেকের বেশি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

চসিক নির্বাচন আগামীকাল অর্ধেকের বেশি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চসিক নির্বাচনের ৪১ ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রে থাকবে ৪ হাজার ৮৮৬টি বুথ। এসব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন ৭৭৫ প্রিসাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৮৮৬ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৯ হাজার ৭৭২ পোলিং অফিসার। এবার চসিক নির্বাচনে ভোটার ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ ও নারী ভোটার ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন। ভোটের নিরাপত্তায় গত সোমবার থেকেই মাঠে নেমেছেন নগর পুলিশের ৭ হাজার ২৫৯ সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রায় ৯ হাজার সদস্য। অতীত সহিংসতার ইতিহাস, প্রার্থীদের অবস্থান এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ৭২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১৭টিকে (প্রায় ৫৮ শতাংশ) ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভোটের দিন এসব কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বিশেষ শাখার উপকমিশনার মো. আবদুল ওয়ারিশ বলেন, চসিক নির্বাচনে নগর ও হাটহাজারী উপজেলা মিলিয়ে ৭৩৫টি কেন্দ্র আছে। কেন্দ্রগুলোর অতীতের সহিংসতার ইতিহাস, প্রার্থীদের অবস্থান এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে প্রায় ৮ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ২৫ প্লাটুন বিজিবি মোবাইল টিমে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে সব কেন্দ্রে কাজ করবে। তিনি জানান, এসব কেন্দ্রে অস্ত্রধারীসহ ছয়জন করে পুলিশ সদস্য ও ১২ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর এই বাইরে সাধারণ কেন্দ্রে অস্ত্রধারীসহ চার জন পুলিশ ও ১২ জন করে আনসার সদস্য থাকবে। এছাড়া, কেন্দ্রের বাইরে টহল পুলিশ, সাদা পোশাকের পুলিশ ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তৎপর থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকবে নগর পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, কাউন্টার টেররিজম ও সোয়াট। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, নির্বাচনের সার্বিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ৬৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের দিন মাঠে সক্রিয় থাকবেন। তাদের নির্দেশনায় মাঠে কাজ করবেন বিজিবি সদস্যরা। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
যান চলাচলে বিধি-নিষেধ: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকছে না। তাই এদিন বন্দরনগরীতে যানবাহন চলাচল ও অফিস-আদালত যথারীতি চলবে বলে আগেই জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েক ধরনের যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ মো. আবদুর রউফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সিএমপির আওতাধীন এলাকায় ভোটগ্রহণের জন্য গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার, মাইক্রোবাস, জিপ, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্রাক, পিকআপ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গত সোমবার মধ্যরাত থেকে জারি হওয়া মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে এই নিষেধাজ্ঞা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। তাছাড়া, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরি সেবা যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। তিনি জানান, এর বাইরে জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহ সহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত- ৩০

বাগআঁচড়া চাঁদাবাজির সময় গণধোলাইয়ের শিকার যুবক