মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ নীলফামারী প্রতিনিধি: দীর্ঘ দিন ধরে অর্থাভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে থাকা দক্ষিণ পাঠানপাড়া সিপাহীর ডাঙ্গা বাইতুন নুর জামে মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়ন কল্পে ২ দিনের ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে স্থানীয়রা। ব্যানার-পোষ্টার ও মাইকিংসহ পুরো দমে চলতে থাকে এর ব্যপক প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম।
কিন্তু হঠাৎই ওয়াজ মাহফিলের ব্যনার-পোষ্টারে লেখা পদবীর কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন মসজিদ সংলগ্ন দক্ষিণ পাঠানপাড়া সিপাহীর ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক ও মাহফিল আয়োজক। ফলে মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়ন ব্যহত হওয়ার শঙ্কায় স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দক্ষিণ পাঠানপাড়া সিপাহীর ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গেলে, সাংসাবাদিকদের দেখে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। এসময় বাইতুন নুর জামে মসজিদের ঈমাম মো.হাসিনুর রহমান মোমিন ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও জড়াজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকা এই এলাকার বাইতুন নুর জামে মসজিদ- মাদ্রাসাটির সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বহুবার ওয়াজ মাহফিল করতে গিয়েও বাঁধাগ্রস্থ হন এলাকাবাসী। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে মসজিদ ও মাদ্রাসাটি। এ বছর স্থানীয়দের উদ্যোগে মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন ও সংস্কার কল্পে ২ দিনের ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করে স্থানীয়রা।
তাঁরা আরও বলেন, মাহফিল আয়োজক ২য় দিনের মাহফিলে সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব ভার দেন আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম খান এঁর উপর। আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম খান এই বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে তিনি প্রথমের দিকে সহকারী শিক্ষক পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও, বিদ্যালয়ের নথিপত্রে জাহাঙ্গীর আলম খানের পদবী সহকারী শিক্ষক হিসেবে তালিকা ভুক্ত হয়। মাহফিল আয়োজকগণ ওয়াজ মাহফিলের ব্যনার- পোষ্টারে জাহাঙ্গীর আলম খান এর পদবী সাবেক প্রধান শিক্ষক লেখায় এ নিয়ে কোন্দল সৃষ্টি করে মাহফিলটি বন্ধের পায়তারা করছেন দক্ষিণ পাঠানপাড়া সিপাহীর ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক আ.খ.ম. রাকিবুল ইসলাম।
বাইতুন নুর জামে মসজিদের সভাপতি মো.কবির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “স্থানীয়দের সহায়তায় বহু আগে প্রতিষ্ঠত হয় এ মসজিদটি। এলাকার ছোট-ছোট কোমলমতি শিশুদের আরবী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে একজন ঈমাম দ্বারা পরিচালিত হয় মাদ্রাসা। কিন্তু দীর্ঘ দিন যাবত এটি অবহেলিত,জরাজীর্ণ। স্থানীয়রা, মসজিদ ও মাদ্রাসার উন্নয়ন কল্পে বিভিন্ন ভাবে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনের চেষ্টা করেও বাঁধাগ্রস্থ হয়েছেন বহুবার। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়”। ব্যনার-পোষ্টারে লিখা পদবী নিয়ে ২ দিনের ওয়াজ মাহফিলটি বিভিন্ন ভাবে বন্ধের পায়তারা করছেন বর্তমানে কর্মরত চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক”।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, দক্ষিণ পাঠানপাড়া সিপাহীর ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. রাকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, “বিদ্যালয়ের নথিপত্রে জাহাঙ্গীর আলম খান একজন সহকারী শিক্ষক। মাহফিল কমিটি ব্যনার-পোষ্টারে ওনার নামের পরে পদবী লিখেছে সাবেক প্রধান শিক্ষক মুলত: এ নিয়েই কথা-কাটাকাটি হয়েছে “। প্রতিষ্ঠা লগ্ন হতে আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম খান কি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম খান”।
তবে, স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিষ্ঠা লগ্ন হতেই দীর্ঘ দিন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম এমন দাবী করে পদবী কোন্দল ছাড়াও, সাংবাদিকদের কাছে বিদ্যালয়টির প্রদত্ত শিক্ষার মান নিয়েও বিরুপ মন্তব্য করে স্থানীয়রা বলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম খান দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে শিক্ষার মান অনেক ভালো ছিল বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তীয় পেয়েছেন। উল্লেখ্য জাহাঙ্গীরুল আলম খান ওই বিদ্যালয়ে বক্তব্যরত থাকি থাকাকালীন সময়ে ২০০৬ ও ২০১১ সালে নীলফামারী জেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিল ২০১৬ সালে তিনি অফিসার গ্রহণ করেন এবং ২০১৮ সালে হজ পালন করেন বর্তমানে সাবেক প্রধান শিক্ষক স্থানীয় ঈদগাহ ময়দান, মাদ্রাসা ও মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ,দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও ঝুকিপুর্ণ মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়ন কল্পে ২ দিনের ওয়াজ মাহফিলটি সফল করতে চাইছেন তাঁরা।
এদিকে, ব্যনার-পোষ্টারে লিখা পদবীর কোন্দলে মসজিদ ও মাদ্রাসার সংস্কার কল্পে আয়োজিত ওয়াজ মাহফিল বন্ধের পায়তারার অভিযোগে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় জাকিউল আলম খান। সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে অভিযোগের তদন্তে আসলে, এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন বিদ্যালয়টির চলতি দায়িত্বেথাকা প্রধান শিক্ষক। এলাকাবাসীর প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মিছিল বের করে।তবে, দুপক্ষের আলোচনায় বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।