আনাছুল হক,কক্সবাজার::: কক্সবাজারের কলাতলীর তারকা মানের আবাসিক হোটেল ইউনি রিসোর্টে গোপন বৈঠকের অভিযোগে ১৯ জন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে হোটেলের সম্মেলন কক্ষ থেকে তাদের আটক করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্যরা গোপন বৈঠক করছেন— এমন খবরে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। সভায় প্রায় ৭০ জন ইউপি সদস্য উপস্থিত থাকলেও, যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাদের মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটক হওয়া টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জহির আহমেদ জানান, “জেলার ৯টি উপজেলার ইউপি সদস্যদের নিয়ে গঠিত মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মিত আলোচনা সভা চলছিল। দেশের সংকটময় সময়ে কীভাবে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। হঠাৎ পুলিশ ও সমন্বয়ক পরিচয়ধারীরা এসে হল রুম ঘেরাও করে এবং আমাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।”
মহেশখালী এলাকার ইউপি সদস্য সেলিম বলেন, “আমাদের বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ছিলেন। এভাবে আমাদের আটক করায় তীব্র নিন্দা জানাই।”
হোটেলে পুলিশ ও কথিত সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই হোটেল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
হোটেলের কক্ষ ৫০৫-এ থাকা পর্যটক মিরাজ জানান, “আমার পরিবারকে নিয়ে এখানে উঠেছিলাম। হঠাৎ পুলিশ ও কিছু অজ্ঞাতপরিচয় লোক ঘেরাও করে। আমাদের নিরাপত্তাহীন মনে হওয়ায় চলে যাচ্ছি।”
অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা সাংবাদিকরা জানায়, ভিডিও ফুটেজ নিতে গেলে কথিত সমন্বয়ক পরিচয়ধারীরা বাধা দেয়।
দৈনিক বাংলার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি আশরাফ বিন ইউছুফ বলেন, “আমাদের ফুটেজ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং এক যুবক আমাদের দালাল বলে গালিগালাজ করেছে। এমন অভিযানে এত সমন্বয়কের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।”
এ ঘটনা ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে নানা আলোচনা চলছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, হোটেলের মতো প্রকাশ্য স্থানে একটি বৈঠককে কেন গোপন বৈঠক বলা হলো, এবং সেখানে এত সমন্বয়ক পরিচয়ধারীর উপস্থিতির কারণ কী?