প্রণব কুমার সাহা, মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের পুলিশ লাইনের ছাদ বাগানে ঝুলছে বিভিন্ন ধরনের ফল । ফলন দেখে দারুণ খুশি পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলমসহ ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। পুলিশ সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে জন্য বড় আকারে বিষমুক্ত তিনটি ছাদবাগান করা হয়েছে ।
ইতিমধ্যে ছাদ বাগান ৩টি বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
ছাদ বাগান ঘুরে দেখা গেছে, থোকা থোকা ঝুলছে লেবু, ডালিম, পেয়ারাসহ নানা রকম ফল। এই দৃশ্য মাদারীপুর পুলিশ লাইনের ভেতরের তিনটি ছাদবাগানের। ছাদবাগানে বিনোদন পেতে শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সের পর্যটক আসছে প্রতিদিনই।
স্বর্ণা সাহা নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ছাদের উপর এমন মনোমুগ্ধকর বাগান দেখে ভালই লাগছে। প্রতিটি বাসা-বাড়ির ছাদে এমন ফল ও ফুলের বাগান হলে প্রকৃতি নতুন রূপ পাবে।
সুলতানা আরেফিন নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, মন ভাল করার জন্য ফুল ও ফলের বাগান দুটিই সুন্দর। পুলিশ লাইনের ভেতর ছাদ বাগানের এমন দৃশ্য মনকে টেনে আনছে। তাই তো ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে আসছি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) ও বাগানটি পরিচর্যাকারীর প্রধান মো. মনিরুজ্জামান ফকির জানান, খালি জায়গাকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ছাদবাগানের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। অল্প খরচে এমন সুন্দর বাগান করা সম্ভব।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম জানান, বাগান থেকে সংগ্রহ করা ফল বিতরণ করা হয় বাহিনীর সদস্যদের মাঝে। এতে বাড়ছে কাজের গতিও। মাল্টা, বারোমাসী আমসহ বিষমুক্ত দেশি-বিদেশি অর্ধশত ফলের গাছ রয়েছে পুলিশের ছাগবাগানে। ইচ্ছা থাকলে প্রতিটি বাসা-বাড়ির ছাদে এমন বাগান করা সম্ভব। এতে একদিকে পুষ্টির চাহিদা মিলবে, অন্যদিকে বিনোদনে যোগ হবে নতুন মাত্রা।
এছাড়াও পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম কর্তৃক মাদারীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং সৌন্দর্য্য বর্ধনকারী দিকগুলো হলো- নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ ও পুলিশ টেরাকোটা শুভ উদ্বোধনের ব্যবস্থাকরণ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ্যাকুরিয়াম এর জন্য সিড়ি নির্মান, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফল গাছ রোপন করে সৌন্দর্য্য বর্ধন, পুলিশ লাইন্সে অবস্থিত পুরাতন পুলিশ হাসপাতাল(এমআই সেন্টার)’কে পুলিশ অফিসার্স মেস হিসাবে উন্নীতকরণ ও বাস্তবায়ন, পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিস, ড্রিল সেড, ট্রাফিক ব্যারাক এবং ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার ভবন সমূহের ছাদে সর্বমোট ১২০(একশত বিশ) টি বিভিন্ন জাতের বৃক্ষ রোপন করে ছাদ বাগান করণ, পুলিশ লাইন্সের পুরাতন কোয়ার্টার্স, মহিলা ব্যারাকের সামনে এবং রেশন স্টোর এর সামনে বিশাল ময়লার স্তুপ পরিস্কার করে উর্বর মাটি দ্বারা ভরাট করে সবজি বাগান করা, পুরুষ ব্যারাক ভবনের সামনে নিচু জায়গা মাটি দ্বারা ভরাট করণ, পুলিশ লাইন্স প্রধান ফটকের পাশে জনসাধারণ ও পুলিশ সদস্যদের যাতায়াতের জন্য সর্বমোট ২৫৭৬(দুই হাজার পাঁচশত ছিয়াত্তর) বর্গফুট রাস্তা টাইলস দ্বারা নির্মাণ করা, পুলিশ লাইন্সের পানি নিষ্কাশনের উদ্দেশ্যে একটি শ্যালো মেশিন এর ব্যবস্থাকরণ, পুলিশ লাইন্স অস্ত্রাগার এবং এমটি শাখার ভবন সমূহ মেরামত, সংস্কার এবং রং করণ, পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদ সংস্কার এবং রং করণ, পুলিশ সুপারের বাসভবন এর নিচু জায়গা সমূহ মাটি দ্বারা ভরাট করণ, পুলিশ সুপারের বাসভবন এর সীমানা প্রাচীর এর পাশ দিয়ে হাঁটাচলার উদ্দেশ্যে টাইলস দ্বারা রাস্তা তৈরী করণ এবং রাস্তার দুই পাশের পাতাবাহার এবং বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা রোপন, পুলিশ সুপারের বাসভবনে সবজি বাগান করণ, বাসভবন সংস্কারকরণ ও রং করণ, বাসভবনের ভিতরে অবস্থিত পুলিশ গার্ডরুম সংস্কারকরণ, টাইলস লাগানো এবং অস্ত্রগুলি ও পোশাক রাখার জন্য গার্ডরুমের ভিতর বক্স (আলমারি) নির্মান, গার্ডের সদস্যদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে গভীর নলকুপ স্থাপন, বাসভবনের মাঝে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের বাগান তৈরীকরণসহ আরো বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার এমন
বিভিন্ন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মাদারীপুরবাসী।