গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় অফিস ছাড়তে নোটিশ

গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় অফিস ছাড়তে নোটিশ

সমাচার ডেস্ক: দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে আগামীকাল রোববারের মধ্যে রাজধানীর পল্টনের কালভার্ট রোডের জামান টাওয়ারে অবস্থিত গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে ভবন কর্তৃপক্ষ। আজ জমির মালিকের পক্ষে মো. রাশিদুল আজিম মিয়া সংগঠনটির সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের কাছে এ-সংক্রান্ত নোটিশ পাঠান।ষষ্ঠ তলার অফিস খালি করা প্রসঙ্গে লেখা নোটিশে জানানো হয়, ‘বর্তমানে আপনাদের দলে অন্তঃকলহ ও কাউন্সিল নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নানা রকম দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই ভবনের অন্যান্য শতাধিক ব্যবহারকারী বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত ও ভীত। তা ছাড়া ভবনের সমিতির পক্ষ থেকে ও আমাদেরকে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই ৯ জুলাইয়ের মধ্যে অফিসটি খালি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়ার বিষয়ে কথা হলে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান (নূরের পক্ষ) বলেন, ‘গত বছরের ১ মার্চ তিন বছরের চুক্তিতে কার্যালয় ভাড়া নেওয়া হয়। মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তিপত্রে কার্যালয় ছাড়তে ছয় মাসের নোটিশের কথা উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং, তারা নোটিশ দিলেই কার্যালয় ছেড়ে দেওয়া হবে—বিষয়টা এমন না।’দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক (রেজা কিবরিয়ার পক্ষ) শাহাবুদ্দিন শুভ বলেন, ‘দুই পক্ষের জন্য যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেই কারণে দেওয়া। এই চিঠিটি নুরকে দেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে কথা বলতে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানকে ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি। মেসেজ দেওয়া হলে তারও কোনো উত্তর দেননি। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও নির্বাহী কমিটির কার্যকারিতা দেখবে ইসি। ইসির উপসচিব (আইন) মো. আব্দুছ সালাম গণ অধিকার পরিষদের তথ্য পুনঃযাচাই-সংক্রান্ত এক চিঠিতে জানান, ইসি কর্তৃক গঠিত গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কার্যকারিতা এবং অন্যান্য বিষয়-সংক্রান্ত তথ্য ১০ জুলাই বেলা ৩টায় পুনঃযাচাই করবে। ওই সময়ে দলের আহ্বায়ক, সদস্যসচিব ও দপ্তর সম্পাদককে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। নিবন্ধন যাচাইয়ের এমন প্রক্রিয়ার মধ্যে ১ জুলাই ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের পক্ষ গণ অধিকার পরিষদ থেকে আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে বাদ দিয়ে রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়েছে। আর পাল্টা পদক্ষেপে রেজা কিবরিয়ার পক্ষ গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব পদে নুরুল হক নুরকে সরিয়ে হাসান আল মামুনকে আনা হয়েছে। দলে ভাঙন ধরার পর ৩ জুলাই গণ অধিকার পরিষদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন ড. রেজা কিবরিয়া। এরপর গত বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সদস্য সংবাদ সম্মেলন করে নুর ও তাঁর সমর্থকদের তৎপরতাকে অবৈধ বলে অভিযোগ করেন। তাঁদের বক্তব্য, রেজা কিবরিয়াই দলের আহ্বায়ক হিসেবে বহাল আছেন। ইসির দল নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ইতিমধ্যে বলেছেন, ‘প্রায় সবকিছু গুছিয়ে আনা হয়েছে। ১২টি দলের কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা কমিটি ও অফিস, সমর্থন তালিকা, প্রয়োজনীয় দলিলের বিষয়ে মাঠপর্যায়ে তদন্ত শেষ হয়েছে। এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও সঠিক তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে।’ এসব দলের প্রতিটি পুনঃযাচাইয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি করা হয়েছে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দল নিবন্ধন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছে ১২টি দল। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যকারিতা পর্যায়ক্রমে পুনঃযাচাই হচ্ছে। চলতি মাসে নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::