দেশটা কারো বাবার নয়: মির্জা ফখরুল

দেশটা কারো বাবার নয়: মির্জা ফখরুল
নিউজ ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশটা কারো বাবার নয়, এটা আপনার আমার সবার দেশ। সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি।কিন্তু সেই দেশে কোন কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই।মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রার আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  বিদ্যুতের অসহনীয় নজিরবিহীন লোডশেডিং, বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রা করে।মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে এই সরকার আমাদের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রেখেছিল। এখন ঘরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে সরকার। আমাদের এমন নেতা নেই যার বিরুদ্ধে একের অধিক মামলা নেই।এ সরকারে একটাই মাত্র কাজ জনগণের পকেট কাটা মন্তব্য করে তিনি বলেন, গ্রামের বাজারে দেখেন না, পকেট কাটা বলে, পকেট কাটা ধর ধর। এখন সময় আসছে আসল পকেট কাটাকে ধরার। এমন একটা জিনিস নেই সেখান থেকে সরকার পকেট কাটে না। মোবাইল থেকে তারা পকেট কেটে নেয়। বিদ্যুতের কার্ডে টাকা দিলে দেখবেন তিনশো টাকা নেই। কেটে নিয়ে গেছে শেখ হাসিনা। এক বছরে আমাদের ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়।‘সরকার এখন বলে কয়লা নেই, গ্যাস নেই, কেন ভাই? টাকাতো আগে নিয়ে নিছো। টাকা কই গেল? সব পাচার করেছো। ’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভিসানীতির কারণে সরকার বেকায়দায় পড়ে গেছে। তাই তারা পাচার করা টাকা নিয়ে আনছে। আবার সেই টাকায় আড়াই পার্সেন্ট ইনসেনটিভ দিতে হচ্ছে। এখন টাকা পাচারকারীদের পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন চুরি করেও পুরস্কার পাওয়া যায়।‘সরকারের গলা বাজি শেষ হয় না। মিডিয়ার ওপর খড়গ বসে আছে। সাংবাদিকরা মন খুলে কিছু বলতে পারে না। ’এদেশটা কারো বাবার নয়, এটা আপনার আমার সবার দেশ উল্লেখ করে বিএনপির ওই নেতা বলেন, সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু সেই দেশে কোন কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই।নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কী চেয়েছিলেন বরিশালের মেয়রপ্রার্থী মারা যাক? ধিক্কার জানাই তার এমন কথায়।তিনি বলেন, সিরাজুল আলম খান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ তাকে মৃত্যুর পর সম্মান পর্যন্ত দিলো না। একটি শোকবার্তাও দেয়নি এ সরকার। কারণ তিনি এদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ছিলেন। এদের তৈরি রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় এই রক্ষী বাহিনী ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে ছিল।‘এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে হাতে নিয়ে সব কুটকৌশল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলো। কারণ তারা বুঝতে পারলো নির্বাচনে গেলে জনগণ তাদের কেউ ভোট দেবে না। কারণ তারা ভালো কিছু করেনি। এই ভয়ে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। ’ওবায়দুল কাদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন না, রাস্তায় পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরকে ছাড়া। দেখবেন কার কত সাহস। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, দেখবেন কার কত সাহস আর শক্তি। জনগণ আপনাদের কী করে।  সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মহাসচিব বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে পালাবার পথ টুকুও পাবে না। এখনতো আবার আমেরিকা আপনাদের পালাবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের মহানগরের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তার করেছে এ সরকার। এরা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানেছে না। আমাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করলেও আন্দোলন বন্ধ হবে? হবে না। এ সরকারের লজ্জাও লাগে না। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অবস্থা বারোটা বাজিয়েছে। স্বয়ং আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন, এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর চায় না। তিনি জানতেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বাটপার, চোর, লুণ্ঠনকারী। তাই তিনি আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করেছিলেন।ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::