ভাষা আন্দোলনে অবদান না থাকলে বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন কেন?

ভাষা আন্দোলনে অবদান না থাকলে বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন কেন?
নিউজ ডেস্ক : ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান না থাকলে পাকিস্তান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জেলে বন্দী করেছিল কেন এমন প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।মবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলনে তার (বঙ্গবন্ধু) যে অবদান সেই অবদান টুকু কিন্তু মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। অনেক বিজ্ঞ জন, আমি নাম বলতে চাই না, চিনি তো সবাইকে, অনেকে বলেছে ওনার আবার কী অবদান ছিল উনি তো জেলেই ছিলেন।শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন বলে ওনার কোনো অবদান নেই তো উনি জেলে ছিলেন কেন এই ভাষা আন্দোলন করতে যেয়েই তো তিনি কারাগারে (বন্ধী হয়েছেন)।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ভাষা মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন সূচনা করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই উদ্যোগে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং আমাদের ভাষার জন্য আন্দোলন শুরু হয় ১৯৪৮ সাল থেকে। আর ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন।পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলনে অবদানের কথা উল্লেখ আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমি একটা ভাষণ দিয়েছিলাম। তখন একজন বিদগ্ধ জন আমাকে খুব ক্রিটিসাইজ করে একটা লেখা লিখল; যে আমি নাকি সব বানিয়ে বানিয়ে বলছি।তিনি বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো নিয়ে আমি আর আমার বান্ধবী বেবি মওদুদ, এমআর আক্তার মুকুলের কাছে যাই। ওনারা তো অনেক উঁচু মাপের লোক, আমাদের মতো ছোট চুনোপুটিরা কিছু লিখলে তো হবে না। তো মুকুল ভাইকে বললাম আপনার কাছে এই যে সমস্ত রিপোর্ট দিলাম, কোন তারিখে কখন কী করেছেন এখানে সব ডিটেইল আছে। ফাইলটা দিলাম; আপনি এর জবাবটা লিখুন। তিনি সত্যিই লিখেছিলেন।বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার একটা প্রবণতা সব সময় ছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর দেখা গেল আমাদের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান, যে স্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। সেই জয়বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ। ৭ই মার্চের ভাষণ, যে ভাষণে গেরিলা যুদ্ধের সমস্ত নির্দেশনা এবং সে ঐতিহাসিক কথা এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; রেডিওতে প্রতিদিন এই বার্তাটা পৌঁছানো হতো। এই ভাষণের কারণে মুক্তিযোদ্ধারা যার যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন; সেই ভাষণটাও নিষিদ্ধ। আসলে বঙ্গবন্ধুর নামই তো মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল।ভাষা-সাহিত্য, সংস্কৃতির বিকাশে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকেই আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি যেন সুন্দরভাবে বিকশিত হয়।তিনি বলেন, আমরা বাঙালি হিসেবেই মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলবো। আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি এই দেশকে আমরা আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নয়নের পথে।ভাষা আন্দোলনে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মাতৃভাষা দিবস, শুধু আমাদের না এটা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি রক্ত দিয়ে রক্তের অক্ষরে একুশের শহীদরা লিখে দিয়ে গেছেন মাকে মা বলে ডাকতে চাই।এ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক-২০২৩ দিয়েছে সরকার। গুণীজনদের হাতে একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া