নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ তহবিল করা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সেখান থেকে ঋণ নিয়ে হল রেনোভেট ও নতুন হল করা যাবে। প্রথমে পাঁচ কোটি টাকার কথা বলা হলেও পরে টাকার অংক বাড়িয়ে ১০ কোটি করা হয়েছে।তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন ইন্ডাস্ট্রি বড় হবে, আবার এক হাজার সিনেমা হল হবে, তখন হয়তো ভিন্ন পরিস্থিতি দাঁড়াবে। কিন্তু আজকের প্রেক্ষাপটে এটির প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে।বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ চলচ্চিত্র শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক, পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক সমিতির সভাপতি, সম্পাদক ও নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি এ কথা বলেন।তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আশার কথা হলো চলচ্চিত্র শিল্প এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা অনুদান দ্বিগুণ করেছি। আগে যেখানে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হতো, এখন দেওয়া হয় ২০ কোটি। আমি যখন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাই, তখন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা আমার কাছে আসেন। তখন তারা আমাকে বলছেন, অনুদান যা দেওয়া হয় তাতে অনেকগুলো হলে সিনেমা মুক্তি পায় না। অনেকগুলো আর্ট ফিল্মের জন্য অনুদান দেওয়া হয় তারা সেগুলো বানায় না। আমি তখন বিষয়টি অনুধাবন করি, আসলে অনেক ছবি যেমন বানানো হয়নি, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারপর বাণিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রেও যেগুলো বানানো হয়েছে। সেগুলো হলে রিলিজ দেওয়া হয়নি, কাউকে স্বত্ব বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা নতুন নীতিমালা করেছি, কমপক্ষে ১০টি হলে সিনেমা মুক্তি দিতে হবে। পরে এটি বাড়িয়ে ২০টি করা হয়েছে।তিনি বলেন, এক কোটি টাকার নিচে কোনো সিনেমা হয় না। ভালো সিনেমা বানাতে মিনিমাম ২ কোটি লাগে। সেক্ষেত্রে তারা পরামর্শ দিলেন অনুদান যেন বাণিজ্যিক ছবিতে দেওয়া হয়। আমরা এরপর থেকে বাণিজ্যিক ছবিতে জোর দেই। আর্ট ফিল্মেও আমরা দিচ্ছি। ডকুমেন্টারিতেও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাণিজ্যিকে অনুদান বাড়ানোর ওপর আমরা জোর দিয়েছি, সেটার সুফলও আমরা পাচ্ছি। ৬৫টাতে নেমে এসেছিল হল সেখান থেকে ২১০টা হয়েছে। আর এক বছরের আরও ১শ বাড়বে।প্রধানমন্ত্রী এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ তহবিল করা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এখান থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য অনেক দরখাস্ত ইতোমধ্যে জমা পড়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে। সিনেপ্লেক্স হচ্ছে। এটা অনুদান নয়, ব্যাংকিং চ্যানেলে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যখন করোনা মহামারি ছিল, তখন ভয়ে কেউ দরখাস্তই করেনি। কারণ তখন হল বন্ধ। পরে করোনা কমে আসার পর দরখাস্ত শুরু করলো। তারপরে ব্যাংকগুলোকে আমাদের বোঝাতে হয়েছে। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা বসেছি। এরপর দরখাস্ত বেড়েছে। এখন আস্তে আস্তে ডিসপার্স হচ্ছে। এখন যেহতু ভালো সিনেমা হচ্ছে তাই দরখাস্ত বাড়ছে। এটা একটা রিভলভিং ফান্ড। এটা দিয়ে অনেক হল রেনোভেট করা যাবে। নতুন হল করা যাবে। প্রথমে ৫ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছিল, আমরা দেখেছি এতে কোয়ালিটি হল হয় না। এজন্য টাকার অংক বাড়িয়ে সেটা ১০ কোটি করা হয়েছে।শুধু আর্ট ফিল্মে অনুদান দেবো আর মেইনস্ট্রিমে দেবো না, অনুদান তো এজন্য নয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনুদান তো সব ধরনের সিনেমার জন্য। সব ধরনের মধ্যে মূলধারা তো হচ্ছে বাণিজ্যিক ছবি, এটা তো সবাইকে স্বীকার করতে হবে। যারা চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে নির্মাণ করেননি তাদের সবার নামে মামলা করা হয়েছে। প্রথমে নোটিশ দেওয়া হয়, এরপর যখন কমপ্লাই করে না তখন মামলা করা হয়। এটার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে টাকা ফেরত দিয়েছে এবং দিচ্ছে, যারা করতে পারেনি। আবার অনেকে বানাচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিনেমা শিল্প, সেখানেও সেন্সর বোর্ড আছে। প্রত্যেকটা রাজ্যের সিনেমার জন্য সেন্সর আছে। এটা থাকতে হবে। যারা বলে থাকার দরকার নেই তারা বুঝে বলে নাকি না বুঝে বলে সেটি আমার প্রশ্ন। পৃথিবীর সব জায়গায় এটা আছে। হাছান মাহমুদ বলেন, কেউ যদি একটি সিনেমা বানিয়ে সেটি আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় এবং সেটা যদি প্রকৃত ঘটনাকে উপস্থাপন না করে যদি সত্য ঘটনার অবলম্বনে হয়, যদি পুরো সত্য ঘটনা না আসে তাহলে তো সেন্সর বোর্ড প্রশ্ন রাখবেই। বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের জন্মের পর থেকে সেন্সর বোর্ড ছিল। সেন্সর বোর্ড থাকতে হবে। বোর্ড যাতে অহেতুক কিছু না করে সেটি আমি নজরে রাখি, তবে সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেগুলো আমরা দেখেছি। সেখানে আমরা যা পেয়েছি সেটা সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।