নিউজ ডেস্ক : রাজশাহীতে একজন কলেজ অধ্যক্ষকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের (এমপি) মারধর এবং পরবর্তীতে তাকে চাপ দিয়ে অস্বীকার করানোর বিষয়ে বিব্রত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট পেলে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে তার বিচার দিতে চাই।এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে রোববার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন।
সেই সময় শিক্ষামন্ত্রীর পাশে বসা ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এছাড়াও ছিলেন মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব এবং কর্মকর্তারা। সম্প্রতি রাজশাহীতে সংসদ সদস্য ওমর ফারুখ চৌধুরী স্থানীয় কলেজ অধ্যক্ষকে প্রকাশ্যে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে ওই কলেজ অধ্যক্ষ আবার সংবাদ সম্মেলন করে তা অস্বীকার করেন এবং মারধরের ঘটনার অডিও রেকর্ড নিয়ে তোলপাড় তৈরি হয়। রাজশাহীতে একজন সংসদ সদস্যের হাতে একজন অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত হওয়া এবং পরবর্তীতে তার চাপে সংবাদ সম্মেলন করে তা অস্বীকারের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেখুন আমরা এখানে দু’জন জনপ্রতিনিধি আছি, আমাদের জন্য নিশ্চয়ই খুব বিব্রতকর। এই অভিযোগগুলো উত্থাপন হওয়ায় খুব বিব্রতকর। আর সেগুলো যদি সত্য হয়, সত্য প্রমাণিত হয় সেগুলো আরও বিব্রতকর। তবে যদি কোনো সংসদ সদস্য এ ধরনের কাজে যুক্ত থাকেন সেক্ষেত্রে সেই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আমরা মন্ত্রণালয় হিসেবে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না। ‘যেটি আমরা করতে পারি, সেটি হলো আমরা স্পিকারের শরণাপন্ন হতো পারি এবং তার মাধ্যমে তার কাছে অভিযোগ উত্থাপন করে আমরা তার কাছে এটির একটি সমাধান চাইতে পারি। আমরা তদন্তের রিপোর্টগুলো পাওয়ার পরে প্রয়োজনে সেই পথ অনুসরণ করবো। ’ শিক্ষকদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন হচ্ছে- এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের কোনো জিনিস বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বে দেখা যাচ্ছে, মানুষের অনেক ধরনের টেনশন, অনেক ধরনের ট্রমার মধ্যে দিয়ে গেছে। করোনা পরবর্তী সময়ে মানুষ অনেক বেশি খুব অসহিষ্ণু আচারণ করছে। এই বয়সের নানা ধরনের ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাওয়ায় অসহিষ্ণুতা নানা ভাবে প্রকাশিত হবার সুযোগ থেকেই যাচ্ছে, আমরা সারা বিশ্বেই সেটা দেখছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন এই ঘটনাগুলো না ঘটে।তিনি বলেন, অতি সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর তদন্ত হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। আর যেখানে ফৌজদারি বিষয় সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখছে। শিক্ষায় যেন অসহিষ্ণুতা দানা বাধতে না পারে সেজন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন কারিকুলামে শিক্ষক ফ্যাসিলেটরের ভূমিকায় থাকবেন। সেখানে একটি আনন্দময় পরিবেশ। নতুন কারিকুলাম যখন চালু হবে তখন শিক্ষার পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকের একটা অনন্য মর্যাদা রয়েছে। আমরা সেই অনন্য মর্যাদার জায়গাটায় শিক্ষকদের দেখতে চাই। আমরা চাই না কোনো জায়গায় কোনোভাবে শিক্ষকের মর্যাদা ভূলণ্ঠিত হোক, আমরা চাই না কোথাও নিগ্রহের শিকার হন। তিনি কোথাও অপমানিত হন বা কোনোভাবে শারীরিক বা মানসিক অবমাননার শিকার হন, লাঞ্ছিত হন- এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। যেখানেই ঘটনা ঘটছে সেখানে তদন্ত হচ্ছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।