নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান রাজধানীতে ২৩ লাখ টাকাসহ ধরা পড়েছেন। এ ঘটনায় তার নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) যে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে থানায় সোপর্দ করেছেন, তা আইন মতে জিডি হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কক্সবাজারস্থ সম্মিলিত কার্যালয়ে পাঠানো হবে। দুদক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।তিনি জানান, সার্ভেয়ার আতিকুরের কাছে ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা পাওয়া গেছে। যা ঘুষের টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান শুক্রবার (১ জুলাই) সকাল নয়টার দিকে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। সে সময় তার ব্যাগ স্ক্যান করলে বিপুল পরিমাণ টাকা দেখা যায়।বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন। কিন্তু এরই মধ্যে সকাল পৌনে ১০টার ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ঘণ্টাখানেক পর শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছালে তল্লাশিতে তার ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়া যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে আতিকুরের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে অপর একটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আতিকুরকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।তিনি জানান, আতিকুরের কাছে যে টাকা পাওয়া গেছে সেগুলোর বৈধ কোনো উৎস দেখাতে পারেননি। বিষয়টি তদন্ত করতে তাকে সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ওখানে পুলিশ এবং দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।এব্যাপারে কথা বলতে রাজী হননি দুদক কক্সবাজারস্থ সম্মিলিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুনিরুল ইসলাম।জানা গেছে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন।এর আগে ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে র্যাব কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছড়ার সার্ভেয়ার ফেরদৌসের বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৭ লাখ টাকা জব্দ করে। এছাড়া বাহারছড়া এলাকায় সার্ভেয়ার ফরিদের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এ ব্যাপারে দায়ের করা মামলার তদন্ত করে দুদক। তাদের তিনটি তদন্তে ভূমি অধিগ্রহণে মোট ৭৮ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এ দুর্নীতির তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে প্রথমে বদলি এবং পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে চাকরিচ্যুত করা হয়।