সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা

সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা

সমাচার রিপোর্ট : সিলেটে বন্যা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এক বার্তায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানায়। বার্তায় বলা হয়েছে, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। এদিকে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিছুক্ষণ পর বন্যাদুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ শুরু করবেন। টানা বৃষ্টি ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় জেলার অধিকাংশ স্কুল-কলেজ পানিতে ডুবে গেছে। ইতোমধ্যে সুরমা, পিয়াইন ও কুশিয়ারাসহ জেলার সব নদীর পানি বেড়েছে। নদীর পানি উপচে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হু হু করে পানি বাড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। পানিতে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করায় বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়দের বাড়ি ও বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। মাত্র দুইদিনের ব্যবধানেই সিলেটের ১১টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। দিনে এবং রাতে সমান তালে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অজানা আতঙ্কে সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকার লোকজন। অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বন্যা আতঙ্কে। স্থানীয়দের মতে, গত বন্যায় ২০০৪ সালের সালের বন্যাকে অতিক্রম করেছে। আর এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অবস্থা এতই বেগতিক যে, মানুষ এখন আশ্রয়ও পাচ্ছেন না, বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয় কেন্দ্র করা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে প্রশাসন। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বানবাসীরা। স্থানীয়রা বলছেন, ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে সুরমা-কুশিয়ারার পানি অনবরত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বেশি প্লাবিত হয়েছে সিলেটের সীমান্তবর্তী অঞ্চল কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ। বানের জলে ভেসে যাচ্ছে কাঁচা ও টিনশেড বাড়িঘর। অনেক জায়গায় নদী ভাঙনও দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এমন অবস্থায় সরকারি সহায়তাও পোঁছাচ্ছে না মানুষের কাছে। গত বন্যায় উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ সহযোগিতা নিয়ে প্রশাসন তৎপর থাকলেও এবার তা অপ্রতুল মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। তারা বলেন, আগে বন্যা কবলিত মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন। জানা গেছে, দ্বিতীয় দফা বন্যার পানিতে নিচু এলাকার অনেকের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা কবির আহমদ জানিয়েছেন, বন্যার পানি অবিরাম নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করছে। রাত ১২টা থেকে পৌর ৪টা পর্যন্ত অন্তত ৬ ইঞ্চি পানি বেড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় সিলেট নগরীর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে আশ্রয় নিতে আসা অনেক লোকজন জড়ো হয়েছেন। তবে এসএসসি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত থাকায় স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে স্কুলের সামনের বারান্দায়, ভ্যানগাড়িতে অবস্থান করছেন মানুষ। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলা ও মহানগরীর অধিকাংশ জনপদ ডুবে গেছে। এরমধ্যে চরম দুর্ভোগ ও সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা। রাস্তাঘাট পানিতে সম্পূর্ণ তলিয়ে যাওয়ায় লাখো বানভাসী মানুষকে উদ্ধারের জন্য সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না কেউ। এছাড়াও এসব গ্রামীণ এলাকায় পৌঁছাতে নৌকাও মিলছে না। ফলে অবস্থা আরও ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। সিলেটের কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, ৫ নম্বর বড়চতুল, পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য ৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকার শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে জরুরী কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়নকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে ৬টি ইউনিয়নে ২৪ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সিনিয়র আবহাওয়াবিধ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, পুরো জুন মাসে ৮১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু ১৬ তারিখ পর্যন্ত ৯৪ দশমিক ৮১ শতাংশ অর্থাৎ ৭৭৪ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে গেছে। আগামী ২৬ জুন পর্য সিলেটে ভারি বর্ষণ হবে। তাতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা : স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুরে হাজার হাজার বসত ঘরে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। ছাতক ও সুনামগঞ্জ শহরের শতশত বসত ঘরের নিচতলা কোমর পানিতে ডুবে আছে। বানভাসী মানুষ জানমাল রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উজানের ঢল ও দিনভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হু হু করে পানি ঢুকছে বসত ঘরে। সাংসারিক জিনিসপত্র চৌকি খাটের উপরে তুলে রেখেও শেষ রক্ষা করতে পারছেন না। টিভি, ফ্রিজসহ কোটি কোটি টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এখন বানের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। পুরো সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ ভাগ বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ছাতক শহরের শতভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়ক হাঁটু পানি থেকে কোমর পানিতে ডুবে আছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোতে অনায়াসে নৌকা চলাচল করছে। ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাঁচটি স্থান কোমর পানিতে ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছাতক,তাহিরপুর দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভপুর উপজেলা। এসব এলাকার প্রধান সড়ক এখন সাঁতার কাটার মতো নিমজ্জিত। নৌকা ছাড়া এসব উপজেলায় যাওয়ার বিকল্প কোনও বাহন নেই। সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, সাহেব বাড়ির ঘাট, উকিলপাড়া, নুতনপাড়া, শান্তিবাগ হাছননগর, পাঠানবাড়ি জেলরোড, মধ্যবাজার, পশ্চিমবাজার, বড়পাড়া, আরপিনগর, মল্লিকপুর ওয়েজখালী, হাজীপাড়া, নবীনগরসহ ৯টি ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ডুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী। বন্যায় সুনামগঞ্জ- সিলেট সড়কের গোবিন্দগঞ্জ-দিঘলী এলাকা প্লাবিত হয়ে সারাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বসতবাড়ির শত শত বিদ্যুতের মিটার পানিতে ডুবে গেছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক শহরজুড়ে এখন থইথই পানি। শহরের এমন কোনও এলাকা ও সড়ক নেই যেটি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে শুরু করে নবীনগর পর্যন্ত পানি আর পানি। কোথাও হাঁটু, কোথাও এর চেয়ে বেশি পানি। কাজীর পয়েন্ট এলাকায় পানি বেশি থাকায় সেখানে নৌকায় যাতায়াত করেছেন লোকজন। দোয়ারাবাজারের ইউএনও ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, দোয়ারাবাজার পুরোটাই বন্যাকবলিত। তারা প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সহায়তার জন্য ২৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় দেওয়া হয়েছে ২০ মেট্রিক টন করে। চারটি পৌরসভায় দেওয়া হয়েছে ৩০ মেট্রিক টন। এ ছাড়া নগদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব বিতরণ করা হচ্ছে। তাহিরপুরে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। বন্যাদুর্গত মানুষজন তাদের গৃহপালিত গবাদিপশুসহ পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। সেই সঙ্গে বন্যার চরম অবনতি হওয়ার পরও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকায় স্কুলপড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট নৌকায় স্কুলে যাচ্ছে। এতে করে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি প্রবল বজ্রপাত ঘটার ফলে এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় হাওরাঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুন গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সীমান্ত নদী যাদুকাটা দিয়ে বিপদসীমার ১.৬ মিলিমিটার উপর দিয়ে ঢলের পানিতে তাহিরপুর উপজেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে ধাবিত হয়েছে। জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও ২/৩ দিন থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান শেখ জানান, উপজেলার ১৪৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে আটটি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় সেগুলোতে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১০/১২ দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পহাড়ী ঢলে তাহিরপুর উপজেলার নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে জেলা সদর সুনামগঞ্জের সঙ্গে গত ৪/৫ দিন ধরে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রবল বর্ষণে মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা সীমান্তের বিভিন্ন ছড়া দিয়ে প্রবল স্রোতের পানি প্রবেশ করছে। বন্যায় প্লাবিত উপজেলার সদর হাসপাতালের নিচতলাসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যাদুকাটা নদীর পানির প্রবল স্রোতে তাহিরপুরের ঘাগটিয়া, রাজারগাও, লামাশ্রম, বিন্নাকুলী, গরকাঠি, ঘাগড়া, পাঠানপাড়া, ছড়া, সোহালা, মোদেরগাও, মাহাতাবপুর, দক্ষিনকুল, আনোয়ারপুর, বালীজুরি, লোহাছুরা গ্রাম এবং বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ানমার, মনবেগ গ্রামসহ দুই উপজেলার প্রায় আর্ধশতাধিক গ্রাম ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। জেলার তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা, আনোয়ারপুর, বালিজুরীসহ আরও কয়েকটি স্থান প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ আছে। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যায় প্লাবিত হয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এসব এলাকার গ্রামীণ ছোট ছোট রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যাদুকাটা নদীর প্রবল স্রোতের তোড়ে বিন্নাকুলী বাজার সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন শাহ আরেফিন (র.) ও অদ্বৈত সেতুর গার্ডার ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাহান কবির বলেন, প্রবল বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে বর্তমানে উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ব্যপক অবনতির দিকে যাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটকবাহী সব নৌযানের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাহিরপুর উপজেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৩ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্য সামগ্রী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণের কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যেই কয়েকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বন্যাদুর্গত মানুষদের মধ্যে এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। বন্যাদুর্গত মানুষকে সংকট মুহূর্তে কন্ট্রোল রুমের দেওয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের অনুরোধ করেছেন ইউএনও রাহান কবির। ব্যাপক বজ্রপাত ঘটায় এই দূর্যোগপূর্ণ পরিবেশে উপজেলাবাসীকে ঘর থেকে বের না হওয়া এবং মনে সাহস নিয়ে বন্যা মোকাবিলার আহবান জানিয়েছেন তিনি। টানা বৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে আয় রোজগার বন্ধ রয়েছে। বানভাসী মানুষ উচ্চ মূল্যে নৌকা ভাড়া করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে যাতায়াত করছেন। শহরের সবকটি শপিং মল প্লাবিত হয়েছে। হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে আছে। গ্রামের মানুষ গবাদিপশু, হাস, মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
দ্রুত বাড়ছে যমুনার পানি, বন্যা আতঙ্কে সিরাজগঞ্জবাসী : দ্রুত গতিতে যমুনার পানি বাড়তে থাকায় সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে গেছে যমুনার পানি। প্লাবিত হচ্ছে চরাঞ্চলের মাঠ। গতকাল শুক্রবার সকালে শহরের হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৮৯ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল (বিপৎসীমা-১৩.৩৫ মিটার)। এছাড়াও কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৯০ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৪১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা-১৫.২৫ মিটার)। এছাড়াও জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, ইছামতি, বড়ালসহ অন্যান্য নদী ও খাল-বিলের পানি বেড়েই চলেছে। যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলের নিম্নভূমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। তলিয়ে যাচ্ছে চলনবিল, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলও। কাজিপুরের তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ বলেন, যমুনায় পানি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। চরাঞ্চলের মাঠগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চলের মানুষ রয়েছে বন্যার আতঙ্কে। এদিকে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী জানান, গত তিনদিনেই চরের নিচু জমিগুলো প্লাবিত হয়েছে। এখন মানুষের ঘরবাড়িতে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাড়িতে পানি উঠতে পারে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, ২২ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত পানি বাড়তে পারে। এর মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। স্বাভাবিক প্লাবন হলেও বন্যা হবে না।
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা-ধরলার পানি, পানিবন্দি শতশত পরিবার : কুড়িগ্রামে ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপরে, বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র-তিস্তারও। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে নদ-নদীতে পানি বাড়ায় জেলা সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারীসহ চিলমারী উপজেলার কয়েশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ধান, পাট ও শাকসবজি ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে। তবে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলার পানি। এতে করে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে লালমনিরহাটে ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি হু হু করে বাড়ছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানিও বিপৎসীমার ছুঁইছুঁই। ফলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন দুই নদীপাড়ের বাসিন্দারা। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৭৪ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয় (স্বাভাবিক ৫২.৬০)। যা বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। স্থানীয়রা জানান, এরইমধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পাশাপাশি জেলার অন্য নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। এতে ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ। জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, তাঁতিপাড়া, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজানের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রানীগঞ্জের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড, সিংঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউনিয়নের পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে নিঘুম রাত কাটাচ্ছেন। হাতীবান্ধার চর সিন্দুর্না আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিস্তার পানি বিকেল থেকে হুহু করে বাড়ছে। নদীর তীরবর্তী হওয়ায় কয়েকদিন থেকে রাতে ঘুম আসছে না চোখে। কখন কী হয়। হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সন্ধ্যা থেকে ক্রমে তিস্তার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করে। এতে শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বন্যাসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ত্রাণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
রংপুরে বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ : রংপুরে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। গঙ্গাচড়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী ও দুর্গম চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৩০টি গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে গঙ্গাচড়া উপজেলায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫টি বাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজারসহ শত শত ঘরবাড়ি। পানি উন্নয়ন বোর্ড দুর্গম চরাঞ্চলের লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম বাগেরহাট এলাকায় কয়েকশ’ বাড়িঘর ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট ও জমির ফসল। দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা সোলেমান মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় রাস্তায় বাস করছি। অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর দিন কাটছে। এখনও সরকারিভাবে কোনও ধরনের সহযোগিতা পাইনি। জানা গেছে, তিস্তার পানি গত পাঁচ দিন ধরে বাড়ছে। গত বুধবার থেকে তিস্তা নদীর পানি গঙ্গাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে উপজলার ছয়টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে কোলকোন্দ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিনবিনিয়াচরের পশ্চিমপাড়ায় ডান তীররক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, বাঁশঝাড়, জমি ও বসতবাড়ি। গত তিন দিনে ২৫টি বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতা এত বেশি যে, লোকজন বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ারও সময় পাচ্ছে না। লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি জানান, বেড়িবাঁধে ভাঙনের ফলে গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হু হু করে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। এলাকায় কয়েকশ’ বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। রাস্তা ভেঙে গেছে লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ওই ইউনিয়নের সদস্য মানিকা বেগম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তিস্তায় পানি বাড়ছে, ভাঙনও চলছে। পানি যদি আরও বাড়ে তাহলে এই এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে আজকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষগুলো। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভাঙনকবলিত কোলকন্দ ইউনিয়নের বিনবিনিয়া চর ও লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতির মুখে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন। তাদেরকে উঁচু স্থানে যেতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, টেকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আহসান হাবিব বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে ভাঙনের খবর পাওয়া গেলে জিওব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। তবে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হওয়া ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

কিরগিজস্তানে কোনো বাংলাদেশির হতাহতের খবর মেলেনি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

মেট্রোরেলে ভ্যাটের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন: সেতুমন্ত্রী