মানবতাবিরোধী মামলায় ফাঁসির আসামি নজরুল আটক

মানবতাবিরোধী মামলায় ফাঁসির আসামি নজরুল আটক
ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামি নজরুল ইসলামকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।শুক্রবার (৩ জুন) সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার এক অভিযানে তাকে আটক করা হয়।র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তিন জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- রেজাউল করিম মন্টু, শহিদ মন্ডল ও মো. নজরুল ইসলাম। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।  তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তাদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।  এ মামলায় আসামি ছিলেন চারজন। তারা হলেন- নওগাঁর মো. রেজাউল করিম মন্টু, মো. নজরুল ইসলাম, মো. শহিদ মণ্ডল ও মো. ইসহাক।  তবে এর মধ্যে মো. ইসহাক (৬২) তদন্ত চলার সময়ই গ্রেফতার অবস্থায় মারা যান। এ কারণে অভিযোগ থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়।  বাকি তিন জনের মধ্যে মন্টু ও মণ্ডল কারাবন্দি রয়েছেন। বাকি আসামি নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।
তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি মো. রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। বাকিরাও জামায়াতের সমর্থক বলে জানানো হয়।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা নওগাঁর (সাবেক রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমা) বদলগাছী থানায় অপরাধ সংঘটন করে।  আসামিদের বিরুদ্ধে সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়।এ মামলায় মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে।দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন ও মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এ সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

বাকেরগঞ্জে ভোট জালিয়াতির পরিকল্পনাকারী আবদুল হক পুলিশ হেফাজতে

হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু