কোনো হজ এজেন্সিকে তিনশর বেশি টিকিট দেওয়া হবে না

কোনো হজ এজেন্সিকে তিনশর বেশি টিকিট দেওয়া হবে না
নিউজ ডেস্ক : করোনার কারণে গিবত দুই বছর হজ পালন করতে পারেনি কেউ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার।সরকারি প্যাকেজগুলোতে খরচ বেড়েছে লাখ টাকা। তবে বেসরকারি প্যাকেজ প্রস্তাব করা হলেও চূড়ান্ত হয়নি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর অধীনে জনপ্রতি ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা ধরা হয়েছে। আর প্যাকেজ-২ এর অধীনে ধরা হয় জনপ্রতি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। হজ প্যাকেজ নিয়ে বুধবার (১১ মে) সচিবালয়ে সভা শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এতথ্য জানান। সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীরা পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার মিটারের মধ্যে এবং প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন।সভায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় জনপ্রতি ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকা প্রস্তাব করা হয়। তবে তা বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ অর্থাৎ ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী হজ পালনের সুযোগ পাবেন।হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য দুইটি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিসগুলোর জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে।ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, হজের জন্য বাংলাদেশ পর্বে কোনো ব্যয় বৃদ্ধি হয়নি। ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩ টাকা। আজকে এই হারের পরিমাণ ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরব পর্বে সকল খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সৌদির কিছু খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন মোয়াল্লেম সার্ভিসের খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। তাছাড়াও সেখানে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িভাড়া এখন সৌদি সরকার কাছাকাছি দূরত্বে যে বাড়িগুলো আছে। এছাড়াও দুই দেশের টাকার মানের পার্থ্যকের কারণেও প্যাকেজের দাম বেড়েছে।২০২০ সালে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার তৃতীয় আরেকটি প্যাকেজ ছিল। তবে এ বছর তৃতীয় প্যাকেজ রাখা হয়নি বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।২০২০ সালের তিনটি প্যাকেজের যেকোনোটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীকে ২০২২ সালের জন্য ঘোষিত প্যাকেজ-১ অথবা প্যাকেজ-২ এর যেকোনো একটি প্যাকেজ নির্বাচন করে প্যাকেজ স্থানান্তরের মাধ্যমে চলতি মৌসুমের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ই-হজ সিস্টেমে প্যাকেজ স্থানান্তরের উক্ত অর্থ প্রাপ্তি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করবে।নিবন্ধনের ক্রম অনুসারে ঢাকার হজ অফিসের পরিচালকের অনুমোদনক্রমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন। ২০২০ সালে যে সকল নিবন্ধিত হজযাত্রী প্যাকেজ স্থানান্তরের মাধ্যমে ২০২২ সনে নিবন্ধন চূড়ান্ত করবেন না অথবা হজে যেতে পারবেন না, তাদের হজ নিবন্ধন বাতিল হবে এবং তারা বিধি মোতাবেক প্রদত্ত অর্থ ফেরত পাবেন।ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থপাপনার প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।বিমানের টিকিট বাবদ গৃহীত অর্থ এজেন্সি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবে না। হজযাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী সরাসরি পে-অর্ডারে মাধ্যমে এয়ারলাইন্সকে উক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন বাবদ গৃহীত অর্থের মাধ্যমে সৌদি আরবে প্রেরণ ব্যতিত এজেন্সি উত্তোলন করতে পারবে না।এ বছর রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় ঢাকার হজযাত্রীদের শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন, ঢাকায় সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠাতে পারবে।  কোনো হজ এজেন্সিকে কোনো অবস্থাতেই ৩০০ এর অধিক টিকিট দেওয়া যাবে না। পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনের জন্য হজযাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে।প্রতি ৪৪ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে গাইড নিয়োগ করা হবে।রাজকীয় সৌদি সরকারের ঘোষিত নিয়ম অনুসারে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের জন্য বিদ্যমান প্রতিস্থাপন (রিপ্লেসমেন্ট) প্রক্রিয়ার পরিবর্তে হজ এজেন্সি ইউজার তার এজেন্সিতে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে নিবন্ধিত এবং ২০২০ সনে নিবন্ধনের সময় উক্ত নিবন্ধিতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধিত ৬৫ বছরের কম বয়সী নারীঅনূর্ধ্ব ১৮ বছরের যারা মাহরামজনিত কারণে যেতে পারবেন না, সেই তালিকার বিপরীতে সমসংখ্যক প্রাক নিবন্ধিতকে সরাসরি পিলগ্রিম আইডি দিতে পারবেন। এই তালিকার জন্য কোটা নির্ধারিত থাকবে না। সৌদি আরবে হজ এজেন্সির কোটা পাঠানোর পরে প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু হবে।সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত খাবার বাবদ পরিশোধিত অর্থ হজে যাওয়ার প্রাক্কালে ফেরত দেওয়া হবে।হজযাত্রীদের কুরবানী বাবদ ব্যয়ের অর্থ সৌদি ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা সৌদি সরকার অনুমোদিত এ ধরনের অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করার জন্য রাজকীয় সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এজন্য হজযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌদি রিয়ালের সমপরিমাণ ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সঙ্গে নিতে হবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

মাদারীপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত