বৈশাখে বেড়েছে ইলিশের চাহিদা, নেই পর্যাপ্ততা

বৈশাখে বেড়েছে ইলিশের চাহিদা, নেই পর্যাপ্ততা
বরগুনা: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশের অন্যান্য জেলার মতো বরগুনাতেও রয়েছে ইলিশের ব্যাপক চাহিদা।উপকূলীয় অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও এখন বরগুনার বাজারগুলোতে মিলছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ।চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিগত বছরের তুলনায় এবার পহেলা বৈশাখে স্থানীয় বাজারগুলোতেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। পৌর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা কেজি দরে, ১ কেজি ৪০০ গ্রামের ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮শ টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা দরে, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা দরে। তবে, বাজারে ছোট ইলিশ দেখা যায়নি। যা অন্য সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২শ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতা কালাম ও শাওন  বলেন, আগে পহেলা বৈশাখের জন্য বাজারে প্রতিদিন হাজার মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো কিন্তু, এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। বাজারে চাহিদার তুলনায় ইলিশের পরিমাণ কম। তাই দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে।

বাজারে ইলিশ কিনতে আসা রাজ্জাক ফকির বলেন, রমজানে পহেলা বৈশাখ হওয়ায় মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ কিছুটা কম। তবে, ইলিশের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ না থাকায় বিক্রেতারা হাঁকডাকে বিক্রি করছেন ইলিশ।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটার মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মাছের পরিসংখ্যানে দেখা যায় পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে শুধুমাত্র ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ২৩ হাজার ৯০.৩৯ মেট্রিক টন। এছাড়াও সামুদ্রিক অন্যান্য মাছ রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ১৬.৪৮ মেট্রিক টন মাছ। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। পাথরঘাটা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু  বলেন, উপকূলীয় নদীগুলোতে ইলিশের সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও গভীর সমুদ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ আহরণ করছেন পাথরঘাটার স্থানীয় জেলেরা। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বাজারে ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাজারে ইলিশ রয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, জেলেরা সরকার ঘোষিত অবরোধ যথাসময় পালন করায় নদীতেও সমুদ্রে মা ইলিশ  ডিম ছাড়ার ইংলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, স্থানীয় বাজারে মাছের পরিমাণ কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বাজারে ইলিশের ভালো দাম থাকলে জেলেরা তাদের ইলিশ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করতে পারেন। সরকার জেলেদের উন্নয়নের জন্য কাজ করলে এই পেশায় আরও অনেকেই এগিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, আমাদের তথ্য মতে, গত ১০ বছরে প্রায় ৩০০ জেলের সলিল সমাধি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে। এদের মধ্যে নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে প্রায় এক হাজারেরও বেশি জেলে।

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পরিচালক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট এম লুৎফর রহমান বলেন, গত বছরের জুলাই মাসের ইলিশ রপ্তানির পরিসংখ্যান অনুসারে এবারের ইলিশ রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে শুধুমাত্র পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ২৩ হাজার ৯০.৩৯ মেট্রিক টন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব  বলেন, প্রাকৃতিক কারণে স্থানীয় নদ-নদীতে আগের তুলনায় কিছুটা কম ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া