মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের চেহারা বদলে যাবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মেগাপ্রকল্পগুলো নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। পদ্মাসেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে—কোনো ঋণ নেওয়া হয়নি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা অন্যান্য মেগাপ্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছি। আর শুধু ঋণ নয়, বিদেশি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তিবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে। ’শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশি-বিদেশি ঋণ নিচ্ছি। তবে তা যাতে বোঝা হয়ে না উঠে সে দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা। ’সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০২২ এবং ২০২৩ হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক বছর। আর কয়েক মাস পরেই চালু হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মাসেতু। এই সেতু জিডিপি-তে ১.২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ’‘এ বছরের শেষ নাগাদ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অংশে মেট্রোরেল চালু হবে। আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। আগামী অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে চালু হবে দেশের প্রথম টানেল। ’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছরের শেষ নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত মাসে পায়রায় ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্ধারিত সময়ের আগেই উদ্বোধন করা হয়েছে। অন্যান্য মেগাপ্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত ১৩ বছরে যে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে, তা অর্থনীতির সামস্টিক সূচকগুলো বিবেচনা করলেই স্পষ্ট হয়। ২০০৯ সালে জিডিপির আকার ছিল মাত্র ১০২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তা ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৭০২ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২,৫৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ’শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ভাবনা এবং দূরদৃষ্টি-সম্পন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে। গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রেখে মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার ফলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। ’প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে পহেলা বৈশাখ এবং পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানান।