মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : শেষ হলো পদ্মা সেতুর রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ। এর ফলে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুতে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল সড়কপথ।সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে সেতুর রোডওয়ের শেষ স্ল্যাব বসানো হয় বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এছাড়া পদ্মা সেতুর মাঝখান দিয়ে গ্যাসলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে শেষ হতে চলছে রেললাইনের কাজও। আগামী বছরের জুনের আগেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা হবে। এ জন্য এ প্রকল্পে কর্মরত সবাই একযোগে দিনরাত কাজ করে চলেছেন। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন যে, ২০২২ সালের জুন মাসের যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। সেই লক্ষ্যে সেতু প্রকল্পে কর্মরত দেশি-বিদেশি শ্রমিকরা কাজ করে চলছেন। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সেতুর মোট ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে সর্বশেষটি সোমবার সকালে বসানো হয়। এর আগে চলতি বছরের ২০ জুন শেষ হয়েছিল দ্বিতল সেতুর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ।সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত সেতু প্রকল্পের সার্বিক কাজ এগিয়েছে ৮৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ মূল সেতুর কাজের আর বাকি মাত্র ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।২০০১ সালে মাওয়া পুরান ফেরিঘাটে মাছ বাজার সংলগ্ন এলাকায় এই সেতুর ফলক উন্মোচন করেন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সরকার বদল হলে, থেমে যায় কাজ। আবার ২০০৯ সালে তোড়জোড় শুরু হয় কাজের। অনেক চড়াই উতরাই পার করে অবশেষে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছিল। একইসঙ্গে চলতে থাকে রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোসহ অন্যান্য কাজ। আজ রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গরূপে পদ্মা সেতু চোখের সামনে শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়।