নিজস্ব প্রতিবেদক : সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (২৬ জুলাই) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম জোরদার করা। সেটা যেন ওয়ার্ড থেকে শুরু হয়ে যায়। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা। ওয়ার্ডে যে সব বয়সের লোকেরা আছেন তাদেরকে ভ্যাকসিনেটেড করার ব্যবস্থা করা। তাদের মধ্যে ভ্যাকসিন নেওয়ার একটা অনীহা আছে। হাসপাতালে দেখা গেছে গ্রামের বয়স্ক লোকেরা আছেন প্রায় ৭০ শতাংশ। শহরের হাসপাতালে গ্রাম থেকে এসেছে। তাদের মৃত্যু সংখ্যাও সব থেকে বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ, যারা আমাদের এখানে বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছে। কাজেই তাদেরকে ভ্যাকসিনেটেড করার জন্য আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। যেটার কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি। এখন আমরা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং উপজেলা লেভেলে বেশি জোরদার করবো। তিনি বলেন, পাশাপাশি যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার আছে, পুলিশ, আর্মি, ডাক্তার, নার্স, গণমাধ্যমকর্মী। বাকি যারা আছেন তাদেরকে এবং তাদের পরিবার এবং পরিবারে যদি কেউ ড্রাইভারও থাকে তাকেও দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ফ্রন্টলাইনারদের ১৮ বছরের ওপরে যারা আছেন তারা পাবেন। ভ্যাকসিনের পরিসংখ্যান নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা ২১ কোটি ডোজ পাচ্ছি বলে বরাবরই বলে আসছি। প্রধানমন্ত্রীর সামনে আবারও তুলে ধরেছি। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে তিন কোটি পাবো, তারমধ্যে ৭০ লাখ পেয়ে গেছি। তিন কোটি চীনের কাছ থেকে পাওয়ার চুক্তি করেছি, তার একটা অংশ চলে এসেছে। বাকিটুকু আসতে থাকবে। এ নিয়ে সাত কোটি হয়ে গেল। কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে থেকে ভ্যাকসিন পাচ্ছি, যেমন-মর্ডানার ভ্যাকসিন, ফাইজারের ভ্যাকসিন। সেখান (কোভ্যাক্স) থেকে আসবে ৬ কোটি ৮০ লাখ। সাত কোটিই ধরেন। আমরা জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে চুক্তি করেছি সাত কোটি ভ্যাকসিনের জন্য। সেটা আগামী বছরের দ্বিতীয় কোয়াটারে হয়তোবা আমরা পাবো।সব মিলে এসব নিয়ে মোট ২১ কোটি ভ্যাকসিন। আমরা ১৪ কোটি লোককে ভ্যাকসিন দিতে পারবো। অর্থাৎ ৮০ শতাংশ লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারবো।বয়স্কদের বাসায় টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সে ধরনের পরিস্থিতি যদি হয় যে আসতে পারছে না, তখন একটা বিকল্প ব্যবস্থা বের করবো। আমরা তো সবাইকেই ভ্যাকসিন দিতে চাই। যেমন আমরা ওয়ার্ডে কেন নিয়ে যাচ্ছি বা ইউনিয়নে কেন নিয়ে যাচ্ছি? আমরা হাজার হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তিনি বলেন, প্রতি মাসে এক থেকে সোয়া এক কোটি করে টিকা দিতে হবে। এর থেকে বেশি পারবো না। ২১ কোটি দিতে তো কমপক্ষে ২১ মাস সময় লাগবে। আমরা এতো সময় নেব না। আমরা চাচ্ছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করবো। টিকা রাখার কোনো সমস্যা হবে না। আট কোটি ডোজ রাখতি পারি। পাশাপাশি টেস্টের ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা গ্রামের বয়স্ক আছেন, তারা টেস্ট করতে চায় না। তাদের তথ্য লুকিয়ে যাওয়ার ফলে অনেকে সংক্রমিত হয়। অক্সিজেন প্রাপ্যতা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে ২০০ টন চলে এসেছে। প্রতি সপ্তাহে ২০০ টন করে আসবে। ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর কিনছি, আদেশ দিয়ে দিয়েছি। একেকটার ক্যাপাসিটি ৫০০ লিটার পার মিনিট, যেটার প্রতিটা দিয়ে পুরো একটা হাসপাতাল দিতে পারবে। সেটা আগষ্টে চলে আসবে। দেশে অক্সিজেনের সমস্যা হয়নি, আগামীতেও ইনশাল্লাহ হবে না।