ঢাকা: রাষ্ট্রের দায়হীনতা আর মালিকদের লোভ-লালসার আগুনে সেজান জুসের কারখানায় ৫২ শ্রমিক জীবন্ত অঙ্গারে পরিণত হয়েছে। রোববার (১১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সভাপতি ডা. এম এ করিম ও সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. এম জাহাঙ্গীর হোসাইন।
বিবৃতে তারা বলেন, করোনাকালেও যে শ্রমিকদের শ্রমে ও ঘামে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। সরকার যেমন শ্রমিকদের বাঁচার মতো ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করেনি, তেমনি নিরাপদ কর্মপরিবেশও নিশ্চিত করেনি। করোনা সংক্রমণের উচ্চহারের কারণে চলমান ‘লকডাউনের’ সময়ে জীবিকার তাগিদে কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক এবং তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে তারা আরও বলেন, একের পর এক অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধসের ঘটনায় অকাতরে হাজার হাজার শ্রমিকের তাজা প্রাণ ঝরে গেলেও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হয়নি।গত নয় বছরে তাজরিন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ড স্পেকট্রাম, কারখানায় ধস, রানা প্লাজায় ধস, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কারখানায় আগুন, হামীম গ্রুপের কারখানায় আগুন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানসহ বিভিন্ন কারখানায় নিহত ও আহত শ্রমিকরা যথাযথ ক্ষতিপূরণও পায়নি।মালিকদের বেপরোয়া শোষণ আর রাষ্ট্রের দায়হীনতার বলি হয়ে শ্রমিকদের আগুনে পুড়ে, ভবন ধসে, নির্যাতনে প্রাণ দিতে হচ্ছে। সরকার কথায় কথায় উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের আধুনিক প্রযুক্তি, পর্যাপ্ত লোকবল ও যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা না করায় প্রায় ২০ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকার ও মালিককে আলাদা করে দেখার অবকাশ নেই। এদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সব সরকারই হচ্ছে শ্রেণী স্বার্থ রক্ষাকারী সরকার। এ ধরনের সরকার কখনোই শ্রমিক-কৃষক-জনগণের কথা ভাববে না, এটাই স্বাভাবিক। তাই মানুষের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা ও প্রকৃত নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে জনঘনের স্বার্থরক্ষাকারী রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা, দালাল পুঁজি বিরোধী শ্রমিক-কৃষক-জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।