শুরুতে প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, বেসরকারি সংস্থা এবং নারী-পুরুষ-তরুণসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে সংগঠিত করে জেলা, উপজেলা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। এরপর একটি কার্যপরিকল্পনা প্রস্তুত করে কাজ শুরু করি। পরবর্তী ধাপে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জনগণকে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা হয়।লিফলেট, মাইকিং, মাস্ক বিতরণ ও হাত ধোয়া কাক্রম প্রদর্শনের মাধ্যমে এসব সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তৃতীয় ধাপে করোনা পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হয়।এছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিবগঞ্জ হাসপাতালে একটি করোনা ইউনিট খোলা হয়েছে, যার শয্যা সংখ্যাও বাড়নো হয়েছে। পাশাপাশি জনগণকে ভ্যাকসিন গ্রহণে উৎসাহিত করতে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।শিবগঞ্জে মে মাসের শেষের দিকে করোনা সংক্রমণের হার ছিল ৬২ শতাংশ। আমাদের এই কার্যক্রম পরিচালনার পর দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রামণের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি নেমে আসে। যদিও এখন একটু বেড়েছে, তবে সেটি খুব বেশি না। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের হারও এখানে অনেক কম। একটি জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, শিবগঞ্জে মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার হার প্রায় ৬৬ শতাংশ, পার্শ্ববর্তী এলাকাতে যা মাত্র ৩০ শতাংশের মতো।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একজন সংসদ সদস্য সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করেছেন। একাত্তর সালে বঙ্গবন্ধু ঘরে ঘরে প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছিলেন, সেজন্যই আমরা মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে পেরেছিলাম।সংসদ সদস্য এবং তার সহযোগীরাও একটা গণআন্দোলন তৈরি করতে পেরেছেন। একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছেন। সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের একটা সুনাম আছে। এই ঐতিহ্যকে তারা কাজে লাগিয়েছেন, বিরাট সফলতা অর্জন করেছেন।শহীদুজ্জামান এমপি বলেন, আমাদের রাজনীতিবিদদের আরও দৃঢ়চিত্ত হয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে হবে।তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটি একটি আদর্শ মডেল হতে পারে। আমাদের মতো অপ্রতুল সম্পদ ও জনবহুল দেশে কমিউটিকে নিয়ে কাজ করার কনো বিকল্প নেই। যতই ভ্যাকসিন আসুক শর্টেজ থাকবেই, যতই হাসপাতালে বেড বাড়ান শর্টেজ থাকবেই- এজন্য সামাজিক জিনিসগুলো অনেক বেশি কার্যকরী। সুভাষ সিংহ রায় বলেন, আমি অভিভূত। রাজনীতিবিদরা যে পারেন এটি তারই প্রমাণ।
মুশতাক হোসেন বলেন, অন্য এলাকায় কীভাবে রিপ্লিকেট করা যায় সেটা দেখতে হবে। সরকার ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে যে কাজ করেছেন সেটা আমরা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একটি জাতীয় কমিটি আছে, স্থানীয় পর্যায়ে যে করোনা প্রতিরোধ কমিটিগুলো সক্রিয় করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি এলাকাতে রোগী যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই কমিউনিটি কন্টেনমেন্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে।ফজলে হাসান বাদশা এমপি বলেন, গ্রাসরুট লেভেল থেকেই অনেক প্রাথমিক রোগীকে সারিয়ে তুলতে পারি। এজন্য গ্রাসরুট লেভেলে কাজ করাই অনেক কার্যকর বলে আমার মনে হয়।মনোরঞ্জন শীল বলেন, ডা. শিমুল সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছেন। অন্য জেলাগুলোতেও জনসম্পৃক্ততা তৈরি করতে পারলে আমরা আরও অনেক বেশি সফল হতে পারতাম। সবাইকে সঙ্গে নিলে সবার মধ্যে একটা দায়বদ্ধতা তৈরি হবে এবং কাজ করার ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকা রাখতেও চেষ্টা করবে।আব্দুল কুদ্দুস এমপি বলেন, আমাদের বড় চিকিৎসা হচ্ছে মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। জনগণ যাতে এগুলো মেনে চলে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ফেরদৌসি ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসন, জনপ্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং জনগণ সবাইকে একসঙ্গে হয়ে কাজ করতে হবে, তাহলেই এটি নিয়ন্ত্রণে আসবে।