নিজস্ব প্রতিবেদক: হেফাজতে ইসলামের নবগঠিত কমিটির মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেছেন, আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব ছিল নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা। সেজন্য আজকে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছি।কাউকে বাদ দেওয়া না দেওয়ার, রাখা না রাখার প্রশ্ন এখানে না করলে ভালো হয়।সোমবার( ৭ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর খিলগাঁও জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলামের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।হেফাজতের যেসব নেতা কারাগারে আছেন তাদেরকে কমিটিতে না রাখার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে নতুন মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, তাদের নতুন কমিটিতে রাখা না রাখার এখানে বিষয় না। কারণ আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব ছিল নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা। সেজন্য আজকে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছি। কাউকে বাদ দেওয়া না দেওয়া, রাখা না রাখার প্রশ্ন এখানে না করলে ভালো হয়।তাহলে তারা কি হেফাজতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না? জবাবে তিনি বলেন, সবাই হেফাজতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সব মুসলাম হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদস্য। আমাদের মুরব্বির ঘোষণা, যেহেতু এটা অরাজনৈতিক সংগঠন সেজন্য এই কমিটির সবসময় অরাজনৈতিক কর্মসূচি ও কর্মকাণ্ড থাকবে। কাউকে বাদ দেওয়া কাউকে বাছাই করার প্রশ্ন নেই। আহ্বায়ক কমিটি চিন্তাভাবনা করে এই কমিটি ঘোষণা করেছে।আগের কমিটিতে যারা ছিল দেখা যাচ্ছে তারা গ্রেফতার হওয়ার পর আপনারা বাদ দিয়েছেন- জবাব তিনি বলেন, বাদ দেওয়ার প্রশ্নই নাই। আমাদের এখানে আজকে যারা উপস্থিত হয়েছেন সবাই হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন, হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ১৫১জন ছিল। এখন এটা প্রাথমিক অবস্থায় ছোট পরিসরে করেছি। এরপরে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে কাদের রাখা হবে না রাখা হবে।পর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ আমাদের বলেনি যে কমিটি করেন। এটা বলার কারণও নেই। চাপ না থাকলে কেন বিলুপ্ত করলেন? জবাবে বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে সেসময় আমাদের আমির সিনিয়র নেতাদের পরামর্শক্রমে কমিটি বিলুপ্ত করেছেন।তাহলে যারা কারাগারে আছেন তাদের অপরাধী মনে করে তাদেরকে বাদ দিয়েছেন? জবাবে নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, কাউকে অপরাধী মনে করার ক্ষমতা আমাদের নেই। অপরাধী মনে করবেন আদালত। আমরা কেন অপরাধী মনে করবো, কি দরকারে মনে করবো?আপনারা আহমদ শফির বড় ছেলে ইউসুফ মাদানীকে কমিটিতে রেখেছেন তারা বলেছেন, এই কমিটি তারা মানেন না এবং এই কমিটিতে থাকবেন না। এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে ওনারা এই কমিটিতে থাকবেন। তারা বললে আপনার সঙ্গে বলেছে, আমাদের সঙ্গে তো বলেনি।তারা যে সংবাদ সম্মেলন করেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা হেফজাতে ইসলামের নামে কোনো সংবাদ সম্মেলন করেনি। তারা ‘আহমদ শফির ভক্তরা’ এই নামে সংবাদ সম্মেলন করেছে। হেফাজত দুইটা বা আরেক নামে হয়েছে এ প্রশ্নটা ঠিক হচ্ছে না।কমিটি বিলুপ্ত করে আপনি (নুরুল ইসলাম জিহাদী) এবং জুনায়েদ বাবুনগরী দায়িত্ব পাওয়ার পর আহমদ শফির অনুসারীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। পরে কমিটি বিলুপ্ত ও পুনরায় নতুন কমিটি ঘোষণা করলেন। তারা প্রত্যাশা করেছিল সবাই মিলে একটা কমিটি হবে, কিন্তু যে কমিটি আপনারা করলেন তাতে সেই ধরণের কমিটি কি হলো?জবাব জিহাদী বলেন, বিদ্রোহ ঘোষণার কোনো নিউজ আমি এ পর্যন্ত দেখিনি। প্রথম কমিটির সময় দেশের শতাধিক গণ্যমান্য ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত হয়েছিলেন। তখন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন সবাই বক্তব্য রেখেছেন, তখন কাউকে বাদ দেওয়া বা বিদ্রোহ করার ঘটনা ঘটেনি। এই কমিটি দিতে পেরে আপনি কতটা খুশি জবাবে বলেন, আমরা সবাই খুশি। আমি একা না, কারণ আমি একা বসিনি সবাইকে নিয়েই বসেছি। আমরা সবাই একদিক দিয়ে খুশি, আর একদিক দিয়ে আমরা দায়িত্ব পালন করতে পারি কিনা, সেজন্য একটু আশঙ্কা আছে। আর আমরা খুশি এজন্য যে এটা দ্বীনি কাজ, ধর্মীয় কাজ, এই খেদমত যদি আমাদের দ্বারা বাস্তবায়ন হয় তাহলে অবশ্যই খুশি।মোদী বিরোধী আন্দোলনের সময় যে ১৭জন মারা গেছেন তাদের জন্য ন্যায়বিচার চাইবেন কিনা? জবাবে বলেন, অবশ্যই চাইবো, আমরোতে চেয়েই আসতেছি। যারা মজলুম হয়ে মারা গেছে, নিরাপরাধ তাদের ব্যাপারে তো অবশ্যই বলতে হবে।আপনারা দেখেছেন এমন কোনো গ্রেফতারকৃত আলেম নেই, যার ছবি আমার ছবি দিয়ে মুক্তি দাবি করিনি। তাদেরকে যাতে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন না করা হয় সেজন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। আমার সঙ্গে ওলামায়ে কেরামদের একটি দল নিয়ে লিখিতভাবে চার দফার মধ্যে এটাও ছিল তাদের যাতে মানসিক শারীরিক নির্যাতন না করা হয় এবং অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হয়। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় গিয়েও বলেছি। এটা আমাদের অব্যাহত থাকবে।