এদিকে প্রচণ্ড গরমে দিনমজুর ও কায়িক শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারী মানুষ রয়েছে বাড়তি দুর্ভোগে। পুকুর-দিঘিতে ঝাঁপ দিয়ে শান্তির পরশ পাওয়ার চেষ্টায় শিশু-কিশোররা। নিউমার্কেট এলাকার রিকশাচালক ওমর আলী বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে রিকশা চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপরই পানি পান করতে হচ্ছে এবং বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। ’তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়া। চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে পানিশূন্যতাসহ অনেকেই এ সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অতিরিক্ত গরম পড়ায় ডায়রিয়া ছাড়াও নবজাতক শিশুসহ বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন গরম ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগে। ফলে উপজেলা হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, খুব গরমে অবসাদ, মাথাব্যথা, বমিভাব, দুর্বলতা, পেশিতে ব্যথা হতে পারে, প্রচণ্ড তৃষ্ণা অনুভব ও প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে। হিট স্ট্রোকের পর্যায়ে চলে গেলে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। এ রকম কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষাকৃত শীতল স্থানে নিতে হবে। রোগী যদি অচেতন না হন, তাহলে মুখে একটু একটু করে পানি, তরল খাওয়ার ও স্যালাইন কিংবা লবণ মেশানো পানীয় দিতে হবে। এই মহামারি পরিস্থিতিতে এমন প্রচণ্ড গরমে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন তারা। অকারণে বাজার, বিপণিবিতানে কেনাকাটা এড়িয়ে চলা, দরকারি কাজে বাইরে গেলেও রোদ এড়িয়ে চলা, পাতলা ও হালকা রঙের সুতি কাপড় পরা, রোদে গেলে ছাতা ও রোদচশমা ব্যবহার করতে জোর দিচ্ছেন তারা।জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সাইমন মাহমুদ বলেন, এসময়ে বাইরের খোলা খাবার খাওয়া যাবে না। পথের ধারের মুখরোচক খাবার, শরবত, আখের রস, জুস, আইসক্রিম-কোনোটাই গ্রহণ করা যাবে না। প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। লবণশূন্যতা এড়াতে লবণ মেশানো পানীয় বা ফলের রস গ্রহণ করতে পারেন। প্রয়োজনে স্যালাইনও খাওয়া যেতে পারে। তবে কিডনি বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পানি, লবণ, ফলের রস প্রভৃতি গ্রহণের মাত্রা চিকিৎসক কর্তৃক নির্ধারিত হতে হয়।‘গরমে অনেকের প্রচণ্ড ঘাম থেকে হয় ঘামাচি। ঘামাচি ও অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা প্রতিরোধে গরম আবহাওয়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করাই ভালো। ঘামাচি হওয়ার প্রবণতা থাকলে মাঝেমধ্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর স্পঞ্জ করে নিতে হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করলে ঘরের তাপমাত্রা সহজ ও সহনীয় সীমার মধ্যেই রাখা ভালো’। বৃহস্পতিবার (২০ মে) চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২.৪ ডিগ্রি বেশি। মূলত জনসংখ্যার ঘনত্ব, গাছপালার অভাব, সুউচ্চ ভবন এবং মানুষের বিভিন্ন কার্যক্রমের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিমত আবহাওয়াবিদদের।