ঢাকা: পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান প্রথম অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসাবে গিনি বিসাউয়ের রাষ্ট্রপতি উমরাও মোকতার সিসোকো এমবালোর কাছে তার পরিচয় পত্র পেশ করেছেন। বুধবার (২৮ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।গিনি বিসাউয়ের রাষ্ট্রপতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পত্র পেশের পর সেদেশের রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রদূতের মধ্যে একটি সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রথম বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত হিসেবে গিনি বিসাউয়ের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করার সুযোগ পেয়ে তিনি গর্বিত। তিনি বাংলাদেশ এবং গিনি বিসাউয়ের ঐতিহাসিক সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন যে উভয় দেশই মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং একইসঙ্গে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করেছে।অতীতে দুই দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক না থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পত্র পেশের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হবে বলেও রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এছাড়াও বাংলাদেশে গিনি বিসাউয়ের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত প্রেরণ করা হলে উভয়দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অধিকতর মজবুদ হবে বলে রাষ্ট্রদূত মত প্রকাশ করেন। তিনি দু’দেশের মধ্যকার অপার বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, গিনি বিসাউ বাংলাদেশ থেকে সুলভ মূল্যে উন্নতমানের পণ্য যেমন তৈরি পোশাক, ওষুধ সামগ্রী, সিরামিক, ইলেক্ট্রনিকস, সফটওয়্যার, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল এমনকি জাহাজ আমদানি করতে পারে। তৃণমূল পর্যায়ে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মত প্রকাশ করেন ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন’র আওতায় বাংলাদেশ এবং গিনি বিসাউ গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কৃষিখাতে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে বিভিন্ন বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোতে দু’দেশের একযোগে কাজ করার উপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে সম্মানজনক পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘ এবং ওআইসি এর মতো বহুপাক্ষিক সংস্থায় গিনি বিসাউয়ের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রপতি রাষ্টদূতের উত্থাপিত বিষয়সমূহকে গুরুত্ব সহকারে শ্রবণ করেন এবং তার দেশে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পত্র পেশের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও শান্তি কামনা করে তাদেরকে শুভেচ্ছা প্রেরণ করেন। সামনের দিনগুলোতে দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরো জোরালো হবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।