নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে মানুষ বাঁচাতে আগামীতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধান।বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে গণভবন থেকে বিসিএস কর্মকর্তাদের ‘৭১তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স’- এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এ পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জানান প্রধানমন্ত্রী।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস এখন একটা মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে এবং আমরাও সেই ধাক্কাটা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের তাৎক্ষনিক কিছু ব্যবস্থা নিলেও ভবিষ্যতে হয়তো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে মানুষ বাঁচানোর জন্য এবং সেটা আমরা নেবো।সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, সমগ্র দেশবাসীকে আজকে এই সভার মাধ্যমে বলবো- প্রত্যেকে আপনারা যাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিটা মেনে চলে সেই ব্যবস্থাটা নেবেন।তিনি বলেন, মানুষের জীবন জীবিকা চলতে হবে। মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে পারি না। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা একান্ত ভাবে অপরিহার্য। এ বিষয়ে সকলে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন এবং প্রত্যেকে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে।‘মাস্ক পরা এটা একান্তভাবে দরকার। এর পাশাপাশি গারগল করা, বাইরে যেখানেই যাবেন ঘরে ফিরে একটু গরম পানির ভাপটা নেবেন। ’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই। আমি জানি এখন আমার যে বয়স তাতে ৪১ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকা বা রাষ্ট্রপরিচালনার কোনো সম্ভবনা নেই। আজকে যারা নবীন, আপনাদের ওপর এই দায়িত্ব পড়বে। আমি বলবো আমার ৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গড়বার সৈনিক হচ্ছে এই নতুন প্রজন্ম, যারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে যোগ দেবেন। দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সব সময় এই কথাটা মনে রাখতে হবে- আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব কৃষক, আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক। সে জনগণ একেবারে হতদরিদ্র হোক, কৃষক হোক, শ্রমিক হোক, একজন ভিখারি হোক সেও কিন্তু এই দেশের মালিক। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে মালিক। আমাদের সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদও কিন্তু এ কথা বলা আছে। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ, সে কথা মনে করে আপনারা তাদের সেবা দেবেন। সেটাই আমি চাই।সরকার প্রধান বলেন, আমাদের মহান মুক্তির সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই বাংলাদেশ হবে ধর্ম, লিঙ্গ, ধনী, দরিদ্র কোন ভেদাভেদ ছাড়া সবার।শেখ হাসিনা বলেন, কেউ তো ইচ্ছে করে দরিদ্র হয় না। আর দরিদ্র হয়ে জন্মালে তাকে আমরা অপবাদ দিতে পারি না। বা কেউ প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক হলে তাকে আমরা অপবাদ দিতে পারি না। কিন্তু তাদের সাহায্য করা দরকার, তারা যেন উঠে দাঁড়াতে পারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে।সাভারে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কোর্সে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।