ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা শিবির
সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে উখিয়ার বালুখালীর ক্ষতিগ্রস্ত আট ও নয় নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে দেখা যায়, অগ্নিকাণ্ডের পর পর শিবিরের যে ভয়াবহতা ছিল, তা অনেকটা কমে এসেছে। রোহিঙ্গারা ঘর তৈরি এবং গোছানোর কাছে ব্যস্ত। ঘটনার পর পর পানি এবং খাবারের যে সংকট তৈরি হয়েছিল, মানবিক সহায়তা পেয়ে তা অনেকটা কাটানো গেছে।
নয় নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের নবী হোসেন বলেন, সেদিন আগুন কোনদিক দিয়ে এসেছে, তাও ভালো করে খেয়াল করতে পারিনি। ঘরে পানি খাওয়ার জন্য একটি গ্লাসও ছিল না। সবকিছুই পুড়ে গেছে।
‘ঘরের মানুষ কে কোথায় ছিল তা জানতাম না। এখন এনজিওরা কাপড় দিয়ে একটি ঘর (তাঁবু) বানিয়ে দিয়েছে। সেই কাপড়ের নিচে আশ্রয় নিয়েছি। ’নয় নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম (৭০) বলেন, আল্লাহর রহমত, কোনো রকমে বাঁচতে পেরেছি। কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে কোনো রকমে পার হয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছি।‘মালামাল যা ছিল সবকিছুই পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়ার পর এখন আমাদের আগের চেয়ে বেশি খেদমত করা হচ্ছে’, যোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত এই বৃদ্ধ।‘আমাদের আল্লাহ ভাল রেখেছে। এর আগেও আগুন লেগে সব পুড়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার আমাদের বেশ সাহায্য করেছে। প্রথমে তাঁবু দিয়েছিল, সেগুলোও পুড়ে গেছে। আবার ঘর তৈরি করে দিয়েছে, তুর্কির সহযোগিতায়’, বলেন ছব্বির আহম্মদ।কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসু দ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরের ইতিহাসে এটিই সবচে বড় এবং ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আগুনে পুড়ে কয়েকটি ক্যাম্প বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে খাবার ও পানির সংকট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছিল। কিন্তু দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দাতা সংস্থা এ দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত এগিয়ে এসেছে। তাই মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে রোহিঙ্গারা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে।মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের আগে-পরে প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এছাড়া নতুন পুরনো মিলে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে এবং নোয়াখালীর ভাসানচরে বসবাস করছে।