ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: পোড়া বাড়ির সামনে বাবা-ছেলের কান্না

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: পোড়া বাড়ির সামনে বাবা-ছেলের কান্না
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : টানা তিন দিনের নারকীয় তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ও মাদ্রাসাছাত্ররা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে সরকারি-বেসসরকারি স্থাপনাসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িঘর।  হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শাহাদৎ হোসেন শোভন একজন।তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। বসবাস করেন জেলা শহরের সরকারপাড়ায়। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও গান পাউডার নিয়ে ঢুকে তার বাড়িতে। তবে এর আগেই টের পেয়ে তার পরিবারের লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন। সাজানো সংসারের সব কিছু মুহূর্তের মধ্যে আগুনে পুড়িয়ে জ্বালিয়ে দেয় হামলাকারীরা। আশপাশের মানুষ নির্বাক হয়ে তাকিয়ে শুধু দেখছিলেন সে দৃশ্য। একদিন পর তার পরিবারের লোকজন এসে দেখেন ঘরের আসবাপত্র থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিছুই নেই। সব পুড়ে ছাই।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ও তার বাবা ওয়ালিদ হোসেনের কান্নার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। বৃদ্ধ বাবা ও ছেলের একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় মোবাইলফোনে ছবিটি অনেকেই ধারণ করেন। পরে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায় ফেসবুকে। ছবিটি শেয়ার করে অনেকেই হেফাজতের নারকীয় তাণ্ডবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে জেলা শহরের সরকারপাড়ায় হেফাজতকর্মীদের হামলার শিকার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎতের বাড়ি পরিদর্শনে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তার পরিবারকে শান্তনা দেন।এছাড়াও হেফাজতকর্মীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাড়ি, ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন এবং আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাসেরের বাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার  বলেন, দিনভর হেফাজতের তাণ্ডবে বিক্ষোভকারীরা টার্গেট করে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারা আমার বাড়ি ও আমার শ্বশুর বাড়িসহ আমার অফিসকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। প্রাণ রক্ষার ভয়ে পরিবারসহ নিরাপদ জায়গায় থাকতে হয়েছে। আমার জীবনের অর্জন করা সব স্মৃতি তারা পুড়িয়ে দিয়েছে।সোমবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন হেফাজতকর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, সবগুলো ঘটনাতেই মামলা প্রক্রিয়াধীন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বিশেষজ্ঞ টিম ডাকা হয়েছে। তারা প্রতিটি ঘটনাস্থল ঘুরে আলামত সংগ্রহ করবে। প্রতিটি ঘটনার মামলা বিশেষজ্ঞ টিম তদন্ত করবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন