নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম ধাপে আগামী ১১ এপ্রিল দেশের ৩৭১টি ইউয়িন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আধা সরকারি পত্রের (ডিও) আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দিয়ে এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর বিধান অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্প্রতি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিজিবি, আনসার ও র্যাব মহাপরিচালক, সব বিভাগীয় কমিশনার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক, সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার, আনসারের জেলা কমাডেন্ট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৫ বিধি অনুসারে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসাররা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করবেন। উক্ত নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারীরা যাতে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবং কর্তব্য সম্পাদনে কোনরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন না করেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছে।চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় জানিয়েছে যে নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন সরকারি/আধা সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হবে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নির্বাচনের কাজে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার স্থাপনা/অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে এবং ওই সব প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত হবে।‘এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য জারিকৃত নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর বিধানাবলির প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো। উক্ত আইনের চার ধারায় নির্বাচন কর্মকর্তার চাকরি ও নিয়ন্ত্রণ এবং ৫ ও ৬ ধারায় যথাক্রমে শৃঙ্খলামূলক বিধানাবলি বিধৃত রয়েছে। ’চিঠিতে বলা হয়ছে, নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব অর্পিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী/ব্যক্তি নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১-এর ২ (ঘ) ধারায় বর্ণিত সংজ্ঞা অনুযায়ী নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং উক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে দায়ী থাকবেন। ভোটগ্রহণের জন্য সাময়িকভাবে নিযুক্ত বিভিন্ন স্তরের সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত/আধাস্বায়ত্তশাসিত দপ্তর/প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যক্তি সবার নির্বাচন কর্মকর্তা। সুতরাং নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে অনীহা, অসহযোগিতা, শৈথিল্য, ভুল তথ্য দেওয়া ইত্যাদির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন এবং তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দেওয়া সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ অনুসারে সরকারের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সবার কর্তব্য। এমতাবস্থায়, উল্লিখিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সরকারের সব মন্ত্রণালয়/বিভাগকে তাদের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রতিও অনুরূপ নির্দেশনা জারি করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৪৪ই অনুসারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতিরেকে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না। সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহকে নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীকে ছুটি দেওয়া এবং অন্যত্র বদলি করা হতে বিরত থাকতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত নির্দেশনাসমূহ জারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/আধাস্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/শিক্ষক/কর্মচারীকে সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।