নিজস্ব প্রতিবেদক : জানমাল ও সম্পদ রক্ষার্থে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে।এসব গুজব রটনাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানানো হয়।রোববার (২৮ মার্চ) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত দু’দিন যাবত কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ধর্মীয় উন্মাদনায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সরাইল, আশুগঞ্জ উপজেলার সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করছে। যার মধ্যে উপজেলা পরিষদ, থানা ভবন, সরকারি ভূমি অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি, রেলস্টেশন, রাজনৈতিক ব্যক্তির বাড়িঘর, প্রেসক্লাবসহ জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে যাচ্ছে। এ জাতীয় ক্ষয়ক্ষতিসহ সব ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হচ্ছে। অন্যথায় জনগণের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার্থে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সরকার আরো উদ্যোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে যে, স্বার্থান্বেষী মহল এতিম ছাত্র ও শিশুদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাস্তায় নামিয়ে সরকারি সম্পত্তিসহ জনগণের সম্পদ ও রাজনৈতিক নেতাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের অপকর্মে নিয়োজিত করায় প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব গুজব রটনাকারীসহ আইন অমান্য করে শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।এর আগে দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখী হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মনে করি নাশকতা মানে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। আপনাদের মাধ্যমে জানাচ্ছি এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য, নতুবা আইন অনুযায়ী আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের যাতে আরো ক্ষতি না হয় সেজন্য সরকার সব ধনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সব সময়ই দুই দল, দুই গ্রাম মারপিট করে। আজ নিরীহ মানুষের বাড়িঘর পোড়াচ্ছেন, সরকারি সম্পদ নষ্ট করছেন। আমরা এর পেছনে যে কারণ অনুমান করছি, আগে জঙ্গিরা নাশকতা করার জন্য যে প্রচেষ্টা নিয়েছিল সেই রকমের হতে পারে। জামায়াত-শিবির হতে পারে, বিএনপির লোকজন মদদ দিতে পারে।তাণ্ডব কী শুধুই হেফাজত করছে, নাকি অন্য কেউ করছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের যে রণকৌশল, বাঁশেরকেল্লা যুক্ত হয়েছে। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, আগে যে জঙ্গি সংগঠনগুলো সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য যে প্রয়াস চালিয়েছিল তারাই নতুনভাবে এখানে সম্পৃক্ত হয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। সবগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। যে যেখানে থাকুক, আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।জঙ্গি সংগঠন বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন— এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগেও আপনারা দেখেছেন, কিছু জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে মদদদাতা রয়েছে। হরকাতুল জিহাদ বলুন, আনসার উল্লাহ বাংলা টিম বলুন, যেটাই বলুন, সবগুলো মূল নেতৃত্ব এসেছে জামায়াত-শিবির থেকে।হরতাল তো হেফাজত ডেকেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, হেফাজত ডেকেছে। এখন হেফাজতের ভেতরে যেগুলো দেখছি, অনেক উসকানি চলে এসেছে। এসবের জন্য আপনারা হেফাজতকে দায়ী করছেন কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাইকেই দায়ী করছি, সবকিছু গুছিয়ে সাক্ষী-প্রমাণ নিয়ে এগুলোর ব্যবস্থা আমরা নেবো।