মুশতাকের মৃত্যু: ৭ আন্দোলনকারীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

মুশতাকের মৃত্যু: ৭ আন্দোলনকারীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ করার সময় আটক সাত বিক্ষোভকারীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ নির্দেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার রাজধানীর শহবাগে মশাল মিছিল করার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে অভিযোগ এনে সাতজনকে আটক করে পুলিশ। পরে শুক্রবার মধ্যরাতে এ সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা করা হয়। এ মামলায় গ্রেফতার সাতজনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয় বলে জানান শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব আলম।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পুলিশকে ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলায় গ্রেফতার সাতজনকে শনিবার আদালতে হাজির করে সাতদিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে শাহবাগ থানা পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ ঘটনার ইন্ধনদাতা ও পলাতক আসামিদের খুঁজে বের করার জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আমজিন হায়দায় (২২), নজিব আমিন চৌধুরী (২৭), তানজিমুর রহমান (২২), আকিব আহমেদ (২২), আরাফাত (২৬), নাজিফা জান্নাত (২৪) ও জয়তী চক্রবর্তী (২৩)।
প্রায় ছয় মাস আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন মুশতাক আহমেদ। বুধবার বন্দি অবস্থায় তিনি মারা যান। এর প্রতিবাদে শুক্রবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বাম ধারার ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় তাদের ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের অভিযোগ, রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্ট বন্ধ করে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। অপরদিকে আন্দোলনকারীদের ‘হামলায়’ ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে জাদুঘরের সামনে এলে আমরা তাদের ইউ টার্ন নিতে বলি। পরে তারা মশালের লাঠি দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এদের একটা গ্রুপ বাম পাশ দিয়ে চলে যায়, আরেকটা গ্রুপ পেছনে ফিরে পুলিশের ওপর অসংখ্য ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের ১২ থেকে ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আমার নিজেরও পায়ে আঘাত লেগে ব্লিডিং হয়েছে।
আহত বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি না তারা কীভাবে আহত হয়েছেন। কিন্তু তারা যেভাবে ইটপাটকেল মেরেছেন, তাদের ইটপাটকেলেই তারা আহত হয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ শুধু তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। তারা যখন ইটপাটকেল মারছেন, তখন পুলিশ চার থেকে পাঁচটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ঘটনার আলোকচিত্রে পুলিশ সদস্যদের লাঠিপেটা করতে দেখা গেছে।
পরিদর্শক মাহবুব বলেন, আহত পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আর গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা, রক্তাক্ত জখম করা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন