ঢাকা: চলমান পৌরসভা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি)। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে ২৯টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং ২৬টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ব্যালট পেপারে। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে মাঠে অবস্থান নিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যরা। নির্বাচনী অপরাধের বিচারার্থে নিয়োজিত রয়েছে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমরাও।এছাড়া ৫৫ পৌরসভার ভোটে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে যান চলাচলের উপর। এক্ষেত্রে পৌরসভাগুলোতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত। আর অন্যান্য যন্ত্রচালিত যান চলাচল বন্ধ থাকবে ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত।ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এদেশে নির্বাচনী সংঘাত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তবে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘাত ঘটবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ‘আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে যা যা দরকার আমরা সব ঠিকঠিকভাবে দেখেছি। আমি আশাকরি, অন্তত এরপর থেকে যে নির্বাচন হবে ভালো হবে। সুষ্ঠু হবে, সংঘাত-সংঘর্ষ হবে না। ’গত ৩ জানুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৬ পৌরসভায় ভোটগ্রহণের জন্য তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ফেনীর পরশুরাম পৌরসভায় সব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সবমিলিয়ে রোববার ৫৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে।ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানিয়েছে, ৫৫টি পৌরসভায় মেয়র পদে ২২১ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৭৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬১৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।নির্বাচনে ৭৯৩টি ভোটকেন্দ্র ও চার হাজার ৮৮৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার আট লাখ ৪২ হাজার ৯৪৫ জন ও নারী ভোটার আট লাখ ৪৪ হাজার ১৫২ জন।ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে মাঠে নামানো হয়েছে ব্যাপক সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।জানা গেছে, ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে- পুলিশের ১৬৭টি মোবাইল ও ৫৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৬৭টি র্যাবের টিম। প্রত্যেক পৌরসভায় গড়ে দুই প্লাটুন বিজিবি ও উপকূলীয় এলাকায় প্রতি পৌরসভায় এক প্লাটুন কোস্টগার্ডও ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র পাহারায় অস্ত্রসহ তিন হাজার ১৭২ জন পুলিশ সদস্য ও পাঁচ হাজার ৫৫১ আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।এছাড়া বিচারিক কাজের জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে ৫০১ জন নির্বাহী ও ৫৫ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ২৪টি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের পৌরসভাগুলোতে ভোটগ্রহণ শুরু করে ইসি। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় ধাপে গত ৩০ জানুয়ারি ৬৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করে ইসি। আর ৩১টি পৌরসভায় পঞ্চমধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।