ঢাকা: রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন হাইকোর্টের সামনে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তার নাম হামিদুল ইসলাম (৫৭)।
তিনি সেগুনবাগিচা এলাকায় ডিস লাইনের ব্যবসা করতেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহতের ছোট ভাই মো. ওয়াহিদুল ইসলাম তার পরিচয় শনাক্ত করেন।তিনি জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর কলেজ রোডে। বাবার নাম মৃত রফিকুল ইসলাম। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল হামিদুল। মেয়ে নায়না ইসলাম (২৪) ও ছেলে নাহিদুল ইসলামসহ (২১) স্ত্রী নার্গিস আক্তারকে নিয়ে সেগুনবাচিগা হাইস্কুলের পাশে বসতি-ময়ূরী এপার্টমেন্টে থাকতেন তিনি। ১৯৯০ সালের পর থেকে তিনি সেগুনবাগিচা ও এর আশপাশের এলাকাতে ডিস লাইনের ব্যবসা করেন।ছোট ভাই ওয়াহিদুল বলেন, ভাইয়ের সঙ্গে কারও শত্রুতা আছে বলে আমরা শুনিনি। তার শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের মনে হচ্ছে এটি ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাত। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে তার বুকে বা পেটে আঘাত করতো, তার পায়ে আঘাত করতো না।এদিকে সাদেক মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে তিনট ফ্ল্যাট রয়েছে হামিদুলের। সাদেক সেখানে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে।তিনি আরও জানান, গতকাল রাতে হামিদুল তাকে ফোন দিয়ে বলেন, বাসার ভাড়ার টাকাগুলো তাকে দিয়ে আসতে, তিনি হাইকোর্ট মাজারের সামনে আছেন। এরপর সাদেক ১২ হাজার টাকা নিয়ে রাত ৮টার দিকে হাইকোর্ট মাজারের সামনে যান। সেখানে জামালের চায়ের দোকানে দুই জন বসে চা পান করে। টাকা দেওয়ার পরে ম্যানেজার সাদেক সিদ্দিকবাজারের দিকে ও হামিদুল তার বাসার দিকে চলে যান।তিনি জানান, রাত দেড়টার দিকে হামিদুলের ছেলে ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে বলেন, তার বাবা বাসায় ফেরেনি এখনও। এরপর খোঁজ নিতে থাকেন সাদেকও। মধ্যরাতে তিনি ঢাকা মেডিক্যালে এসে তার লাশের খোঁজ পান।ছিনতাইকারী এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাদের ধারনা। চা পান করার সময় থেকেই হয়তো তাকে ফলো করেছে ছিনতাইকারীরা।সাদেক মিয়া আরও জানান, বাংলাদেশ জাসদ এর শাহবাগ থানার সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন হামিদুল।এদিকে শাহবাগ থানার (ওসি) মো. মামুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু তার মানিব্যাগ মোবাইলটি খোয়া গিয়েছে। তবুও অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না সব বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখছি। পরিবারের লোকজন থানায় অবস্থান করছেন এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ব্যাপারে দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নিহত ব্যক্তি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না এখনো জানা যায়নি। তবে তিনি ডিশ ব্যবসায়ী ছিলেন। এর আগে গতকাল রাতে হাইকোর্ট মাজারের সামনে ছুরির আঘাতে আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের নাম ঠিকানা জানতে পারেনি পুলিশ। পরে রাতে সিআইডি ক্রাইম সিন নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহ করে।