ঢাকা: করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ভ্যাকসিন কূটনীতি জোরালো করছে সরকার। ভ্যাকসিন পেতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভারত, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে শুধু একটি দেশের ওপর ভরসা না রেখে বিকল্পও রাখতে চাইছে সরকার। এদিকে বাংলাদেশ ঘিরেও কোনো কোনো দেশ ভ্যাকসিন কূটনীতি অব্যাহত রেখেছে।ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে বাংলাদেশ। সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন আনার চুক্তি হয়েছে। সম্প্রতি সেরামের ভ্যাকসিন বিদেশে রপ্তানির অনুমোদন নেই— এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পরে বাংলাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরবর্তীতে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সেরামের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে।সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ঘিরে ভারত ও চীন উভয় দেশই ভ্যাকসিন কূটনীতি চালিয়ে আসছে। ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের সাথে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় উভয় দেশই। সে কারণে উভয় দেশই বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী। গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে সহযোগিতার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।চীন থেকেও ভ্যাকসিন আনার উদ্যোগ রয়েছে। দেশটিও বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দিতে আগ্রহী। চীনের সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদনও দিয়েছে বাংলাদেশ। এদিকে রাশিয়া থেকে ভ্যাকসিন আনার বিষয়েও উদ্যোগ রয়েছে। রাশিয়া থেকে স্পুটনিক ভ্যাকসিন আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।গত বছর জুন মাসে যুক্তরাজ্য সরকার আয়োজিত গ্লোবাল ভ্যাকসিন সামিটে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামিটে করোনা মহামারি থেকে রক্ষায় বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন সহজলভ্য করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সামিটের ফলাফল অনুযায়ী গ্যাভি-কোভেক্স উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। আর এই গ্যাভি-কোভেক্স থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ সরকার।এদিকে কোভেক্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার কোম্পানি থেকেও ভ্যাকসিন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কোভেক্স এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দিয়েছে। তবে এই ভ্যাকসিন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারত থেকে ভ্যাকসিন আনার ব্যবস্থা করেছি। ভারতের পক্ষ থেকে যথাসময়ে ভ্যাকসিন আসবে বলে তারা জানিয়েছে। একই সাথে বিকল্প হিসেবে রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।