বছরে জরায়ুমুখের ক্যানসারে মারা যায় ৫২১৪ জন

বছরে জরায়ুমুখের ক্যানসারে মারা যায় ৫২১৪ জন
ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী-বাংলাদেশে নারী-ক্যানসার রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে পরেই জরায়ুমুখের ক্যানসারের অবস্থান। প্রতিবছর নারী-ক্যানসার রোগীদের মধ্যে আট হাজার ৬৮ জন নারী নতুন করে জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে, নারী-ক্যানসার রোগীর প্রায় ১২ শতাংশ বা পাঁচ হাজার দুইশ ১৪ জন মারা যাচ্ছেন। শনিবার (৯ জানুয়ারি) দেশে পঞ্চমবারের মতো পালিত হয় ‘জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা দিবস’। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় শনিবার ‘মার্চ ফর মাদার’ নামের মোর্চার উদ্যোগে এই দিবসটি পালিত হয়। এছাড়া পুরো জানুয়ারি মাস বিশ্বে জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা মাস হিসেবে উদযাপিত হয়। চলতি বছরের এ উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, এর উদ্বোধন হলো জুম প্ল্যাটফর্মে। এবছরের প্রতিপাদ্য ‘এইচপিভি নামের দুষ্ট ভাইরাসকে জানুন’ শিরোনামে। দেশের খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ, ক্যানসার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও নারী সংগঠনের নেতারা এই আলোচনায় অংশ নেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক টি এ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জননীর জন্য পদযাত্রার প্রধান সমন্বয়কারী ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে এইচপিভি ভাইরাস ও এর সঙ্গে জরায়ুমুখসহ অন্যান্য ক্যানসার ও নন-ক্যানসার স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউর গাইনি অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা, জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রোকেয়া আনোয়ার ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অনকোলজি ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক ডা কাশেফা খাতুন।আলোচনায় অংশ নেন ওজিএসবির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রওশন আরা বেগম, ও বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী, কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবেরা খাতুন, ওআইডাব্লিউসিএর জাতীয় সাধারণ সম্পাদক হেলেন মনিষা সরকার, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শারমিন ইয়াসমিন, ক্যানসার প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোসাররত সৌরভ, নারীপক্ষের প্রধান শিরিন হক, নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ শারমিন, রোটারি ক্লাব অব ঢাকা গোল্ডেন সিটির সভাপতি মাসুদ করিম ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রধান বজলুর রহমান।
বক্তারা বলেন, ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি যা প্রায় বিভিন্ন পর্যায়ের ৪শ সরকারি হাসপাতলের ভায়া সেন্টারে চালু আছে, তা অসংগঠিত, হাসপাতালকেন্দ্রিক । একে সমাজভিত্তিক সংগঠিত রূপ না দিলে ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের এর আওতায় আনা সুদূরপরাহত। এর বাইরে সরকারি-বেসরকারি কিছু উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, এটা আশার কথা। তবে সঠিক পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার আওতায় জাতীয় ক্যানসার স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এখন সময়ের দাবি, যা হবে সমাজভিত্তিক, সংগঠিত ও সম্পূর্ণ। সভায় বক্তারা মতপ্রকাশ করেন, কেবল সরকারের দায়িত্ব নয়, চিকিৎসকসমাজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যান্য অংশীজন, সব শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ক্যানসার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি সম্ভব। পুরো জানুয়ারিজুড়ে ঢাকার বাইরে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালানোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এই অনুষ্ঠানে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন