নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় একই কর্মকর্তাকে দিয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে এদিন রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ ও শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো.খুরশীদ আলম খান। খুরশীদ আলম খান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় একই কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তবে আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। যেগুলো রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে বোঝা যাবে। তবে এ রায়ের ফলে একই ব্যক্তি অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে আইনি কোনো বাধা নেই। এর আগে গত ১৭ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় একই কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। পরে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য গতকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। এর আগে বেসরকারি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম চলতি বছর এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. শামসুল আলম। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রও দাখিল করেন মো. শামসুল আলম। অভিযোগপত্রে আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৩২ কোটি ২০ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫৬ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় গত ৩ আগস্ট অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ২৪(১) বিধি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট বিধিতে বলা হয়েছে, আইনের তফসিলভুক্ত কোনো অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান এবং তদন্ত একই কর্মকর্তা দ্বারা সম্পন্ন করা যাবে। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর আদালত রুল জারি করেন। রুলে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম চালানো সংক্রান্ত ২০০৭ সালের ২৬ নভেম্বর সংশোধিত বিধি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং রিট আবেদনকারীর বিরুদ্ধে চলমান মামলা কেন বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। রিটে বলা হয়, একই কর্মকর্তা কর্তৃক দুদকের মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত সংবিধানের ২৯ ও ৩০ অনুচ্ছেদেরে পরিপন্থী। অপরদিকে, দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনুসন্ধান কর্মকর্তা অভিযোগের অনুসন্ধান করে মেমো অব এভিডেন্স জমা দেন। এরপর তা কমিশনের লিগ্যাল উইংয়ে যায়। এরপর কমিশন অনুমোদন করলে এজাহার দাখিল করা হয়। নিয়োগ হয় তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তা মামলার অভিযোগ তদন্ত করে মেমো অব এভিডেন্স জমা দেন। এতেও কমিশনের অনুমোদন লাগে। কমিশন সন্তুষ্ট হলে তখন অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তাই একই ব্যক্তি অনুসন্ধান ও তদন্ত কর্মকর্তা হলেও যথেচ্ছ কাজ করার সুযোগ নেই।