ভলেন্টিয়ারদের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রস্তুত করা হচ্ছে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

ভলেন্টিয়ারদের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রস্তুত করা হচ্ছে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভলেন্টিয়ারদের কাজ কিভাবে আরও কার্যকর করা যায় তার জন্য সরকার জাতীয় নীতিমালা প্রস্তুত করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। গতকাল শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বেচ্ছাসেবা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইউএনভি, ওয়াটারএইড, এমএলজিআরডিসি এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। তাজুল ইসলাম বলেন, দেশ যখন কোনো দুর্যোগের সম্মুখীন হয় তখন সবাই মিলে আমরা মোকাবিলা করার চেষ্টা করি। যখনই কোনো মানবিক বিপর্যয় আসে তখনই আমাদের দেশের মানুষ তা থেকে উত্তরণের চেষ্টা করেন। তারা মানসিকভাবে মোটিভেটেড হয় শারীরিকভাবে কাজ করেন। এজন্য ভলেন্টিয়ারদের ভূমিকা অতুলনীয়। এই কাজের মাধ্যমে তরুণদের সঠিক পথে পরিচালিত করা যাবে। তাদের মাদক নেওয়া, চাঁদাবাজি ও অসৎ পথ থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে। মন্ত্রী বলেন, এজন্য ভলেন্টিয়ারিজমের জন্য একটা জাতীয় নীতিমালা করা হচ্ছে। এজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগবে। সেটার জন্য আমরা দ্রুত এগোচ্ছি। আমি এর দায়িত্ব নিচ্ছি। এই পলিসি করার জন্য যেখানে যেখানে কথা বলা দরকার আমি কথা বলছি। এজন্য আমাদের কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর মিয়া সেপ্পো, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ইউএনবি বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর আখতার উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষ থেকে সবা জন্য স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণে সরকারি উদ্যোগ আরও জোরদার করার লক্ষ্যে এশীয় ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট সেক্টরের মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় যোগ দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। সেখানে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে সরকার। ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি’র নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা ৬.১ ও ৬.২ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি’র ৬.১ ও ৬.২ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে দেশে ৯.৩৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার প্রয়োজন। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে এ কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার ও বেসরকারি খাত থেকে প্রায় ১৩০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার বিষয়ে অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। ওয়াটার, স্যানিটেশন খাতে সরকারের বাৎসরিক বরাদ্দ প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধিপূর্বক এ সেক্টরে বর্তমান বাজেট গ্যাপ অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, হাত ধোয়া, পরিবেশ দূষণসহ স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহের বিষয়ে জনসচেতনতা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। মো. তাজুল ইসলাম জানান, মানুষের কাছে সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে প্রত্যেক জেলায় টেস্টিং ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পৌর এলাকার পাশাপাশি গ্রাম অঞ্চলে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করার লক্ষ্যে অনেক মেগা প্রজেক্ট হাতে নেয়া হচ্ছে। সরকার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভূ-উপরিস্থ পানি বা সারফেস ওয়াটারের ব্যবহারে প্রাধান্য দিচ্ছে বলেও জানান তিনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে আর্সেনিক দূষণ আক্রান্ত এলাকার প্রায় ২০ লাখ জনগণকে আর্সেনিক দূষণমুক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহের আওতায় আনা হবে। নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা ৫ শতাংশ বৃদ্ধি ও ৭৫ শতাংশ জনগণকে বেসিক স্যানিটেশন কভারেজ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। করোনা মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ ও নির্দেশনার বিষয়ে সভায় সবাইকে অবহিত করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। সভায় আফগানিস্তান, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, লাওস, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মিনারমার, পাকিস্তান, ভুটানসহ এশীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, সবার জন্য স্যানিটেশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে এশীয় ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট সেক্টরের মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রীগণের অংশগ্রহণে প্রতি দুই বছর পরপর বিশ্ব ব্যাংকের সদরদপ্তর ওয়াশিংটন ডিসিতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ওয়াশিংটনে একত্র হতে না পারলেও স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল-এর (এসডাব্লিউএ) আয়োজনে ভার্চুয়ালি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সন্দ্বীপে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা

বাংলাদেশ ইসকন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, বিতর্কিত মৎস্য কর্মকর্তাকে বদলি