ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জোর করে নেওয়া হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জোর করে নেওয়া হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাসানচরে কাউকে জোর করে নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র যারা সেচ্ছায় সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন, তাদেরই স্থানান্তর করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাসানচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে জাতিংসঘের নানা শর্তজুড়ে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে এ কথা জানান মন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রোহিঙ্গাদের আমেরিকা কেন নিয়ে যাচ্ছেন না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রোহিঙ্গাদের কেন যুক্তরাজ্যে-ইউরোপে নিয়ে যাচ্ছেন না। আপনারা তাদের জিজ্ঞাসা করেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার লোকরা কক্সবাজারকে ডেঞ্জার জোন মনে করে। সে কারণে তারা প্রতিদিন সাড়ে চার’শ ডলার পারডেম পান। ভাসানচরে গেলে তো পারডেম দেওয়া লাগবে না। খরচ বেঁচে যাবে। ড. মোমেন বলেন, সাড়ে তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক সংস্থা চেষ্টা করছে, তবে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে পাঠাতে পারেনি। রাখাইনে কি হচ্ছে, তারা সেটা মিয়ানমারের কাছ থেকে কেন জানতে পারছে না। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, প্রথম দিন থেকেই তাদের অবহিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের শিবির থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্গম ভাসানচরে স্থানান্তর দ্রুত বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন- নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ও লন্ডনভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। একটি স্বচ্ছ স্থানান্তরপ্রক্রিয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবহিতপূর্বক পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে। ভাসানচরের ভেতরে-বাইরে তাদের চলাচলের স্বাধীনতা থাকতে হবে। এর আগে বুধবার ভাসান চরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তরকরণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ভাসান চরে প্রারম্ভিক স্থানান্তরের কাজ আগামী কিছুদিনের মধ্যে শুরু করার সম্ভাবনা বিষয়ক কিছু প্রতিবেদন সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত রয়েছে। ওই স্থানান্তরের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে, অথবা শরণার্থীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ কারণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে এই ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে সাইক্লোন সেল্টার, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অবকাঠামো।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের ৮ মাস না পেরোতেই ভাঙন

সিন্ডিকেটের কারনে আলুর দামের উর্ধ্বগতি