নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি ২০২১ সালে বছরব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে এবং এ কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেবে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম এসব কথা জানান। লিখিত বক্তব্যে ড. মোশাররফ বলেন, ‘২৬ মার্চ ২০২১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি-স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপনের লক্ষ্যে বিএনপি গঠিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রথম ভার্চ্যুয়াল সভা আমার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সঞ্চালনায় গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে উদযাপন কমিটির প্রথম সভার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ’ তিনি বলেন, ‘সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে প্রাথমিকভাবে যেসব কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ বিষয়ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা, অঙ্কন প্রতিযোগিতা, চিত্রপ্রদর্শনী, বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা যেমনÑ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, বৈদেশিক নীতি, সমাজতন্ত্র থেকে মুক্ত বাজার অর্থনীতি ইত্যাদি। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিএনপির ভূমিকা, শহীদ জিয়ার কর্মসূচি ভিত্তিক কর্মশালা, বিএনপির বিভিন্ন শাসনামলের সাফল্য, লিফলেট, পুস্তিকা প্রকাশ, লিফলেট বিতরণ, ডকুমেন্টারি নির্মাণ, নৃত্যনাট্য, পথনাটক, সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী, বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়ামÑ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে বিএনপির ভূমিকা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন, দেশ গঠনে ১৯ দফার ভূমিকা, সেনাবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তর, শহীদ জিয়ার উন্নয়নের রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা সভা ও প্রকাশনা।’ ড. মোশাররফ বলেন, ‘২০২১ সালে অন্তত ৬টি বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা প্রকাশের প্রস্তাব গৃহীত হয়। তাছাড়া, সারা বছরব্যাপী কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে আলোচনা সভা, দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ স্পট/স্থাপনায় সমাবেশ করা, জেলা-উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে উৎসবমুখর পরিবেশে জনসমাবেশ ও র্যালির প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীকালে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে অন্য কর্মসূচি সংযোজন অথবা বিয়োজন করা হবে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যেসব বিষয়ভিত্তিক উপকমিটি গঠন করা হবে তার অন্যতম অর্থ উপকমিটি, প্রচার, প্রকাশনা, ব্যবস্থাপনা, সাজ-সজ্জা, দপ্তর, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া উপকমিটি। এছাড়া, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ স্ব স্ব কর্মসূচি নেবে। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম ব্যাপক কর্মসূচি নেবে।’ ড. মোশাররফ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ তৎকালীন সরকারি মালিকানাধীন দৈনিক বাংলা পত্রিকা এবং পরবর্তীকালে আবার ১৯৭৪ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান রচিত ‘একটি জাতির জন্ম’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এ নিবন্ধটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের একটি অনন্য দলিল। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের দল বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে গঠিত বিশেষ কমিটির কার্যক্রম এগিয়ে নিতে স্বাধীনতার ঘোষকের প্রবন্ধটি একটি গাইডলাইন হিসেবে নেওয়ার কথা বলা হয়।’ তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারের বাইরে অবস্থান করলেও প্রকৃতপক্ষে নিজ বাসায় অন্তরীণই রয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান দীর্ঘদিন থেকে বিদেশে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন। মিথ্যা মামলার কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না। বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের স্টিম রোলারের যাঁতাকলে বিএনপির নেতাকর্মীরা আজ হত্যা, গুম ও মিথ্যা মামলার শিকার। তা সত্ত্বেও দেশের প্রকৃত মালিক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যথাযথ গুরুত্ব ও উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করবে।’