তিনি বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা উভয় দেশই পরস্পর সমৃদ্ধ ও সুখী প্রতিবেশী দেশ হিসেবে একে অপরকে দেখতে চাই।
মতবিনিময়কালে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও নিউজটোয়েন্টিফোরের সিইও নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান, নিউজটোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি শাবান মাহমুদ প্রমুখ।
হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে এবছর মুজিববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। একই সঙ্গে আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে বলে আমরা আশা করছি। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এছাড়া আসন্ন বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে। এসব কাজের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌছাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
করোনা পরবর্তী বাণিজ্য বাড়াতে পদক্ষেপ:
এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য রয়েছে। আমরা এই বাণিজ্য বাড়াতে চাই। তবে করোনা ভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা দু’দেশের বাণিজ্য কীভাবে আরো বাড়ানো যায়, করোনার প্রভাব কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, আমরা সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশই প্রথম অগ্রাধিকার:
‘প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ভারত সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশী দেশ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঢাকায় এসে বলেছিলেন, ‘ভারতের কাছে প্রতিবেশী প্রথম। আর প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম’। আমরা এখনো সেটাকেই বিশ্বাস করি। ’
দুই দেশের জনগণের অগ্রাধিকার প্রাধান্য:
বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মৌলিক কল্যাণে দু’দেশেরই নজর দিতে হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। তিনি বলেন, দু’দেশের জনগণের মৌলিক কল্যাণকে আমরা অগ্রাধিকার দিতে চাই। কেননা দুই দেশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধনের ইতিহাসে আবদ্ধ। একই সঙ্গে ইতিহাস, সভ্যতা, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আমরা ভাগাভাগি করে চলেছি। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় রয়েছে অনেক।
কোভিড ভ্যাকসিনে সহায়তা:
ভারতীয় হাইকমিশনার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের জন্য চেষ্টা করছে ভারত। ভারতের বায়োটেক কোম্পানি এই ভাইরাসের ট্রায়াল শুরু করেছে। তবে ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারত একযোগে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা একে অপরকে সহায়তা করতে চাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন বণ্টনের ক্ষেত্রে আমরা কোনো ন্যাশনালিজমকে প্রাধান্য দেবো না। বাস্তবতা অনুযায়ী যে দেশেরই প্রয়োজন হবে, সেদেশকেই দিতে চাই। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা, ভুটান প্রভৃতি যেকোনো দেশই হতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধান চায় ভারত:
ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া পরিদর্শনকালে মতবিনিময় সভায় ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহায়তা করলেও বাংলাদেশের ওপর সবচেয়ে প্রভাব পড়ছে। আমরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত মানবিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান চায়। মতবিনিময় শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া পরিদর্শন করেন। এসময় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ইস্টওয়েস্ট মিডিয়ার শীর্ষ নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন।