জনগণের প্রত্যাখ্যানের প্রতিশোধ নিতে ফের অগ্নিসন্ত্রাস : কাদের

জনগণের প্রত্যাখ্যানের প্রতিশোধ নিতে ফের অগ্নিসন্ত্রাস : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন ও আন্দোলনে জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ পুড়িয়ে প্রতিশোধ নিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে যুক্ত হন। তিনি বলেন, বিএনপির অতীত ষড়যন্ত্রের, তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হত্যা ও সন্ত্রাসের। নিকট অতীতেও তারা পেট্রলবোমা এবং আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ হত্যার মহোৎসব করেছিল। ২০১৩ সালে যাত্রীবেসে বাসে উঠে গান-পাউডার দিয়ে যেভাবে আগুন দিয়েছে, এবারও তারা সেভাবেই আগুন দিয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাস পোড়ানোর ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আছে, সবই পুরোনো এবং চেনামুখ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি ফোনালাপের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনো পকেট কমিটি করা যাবে না, ত্যাগী ও দলের নিবেদিতদের কমিটিতে স্থান করে দিতে হবে। তিনি বলেন, সংগঠনের জন্য সাংগঠনিক ঐক্যের বিকল্প নেই। সংগঠনকে মজবুত জনবহুল তরীতে পরিণত করতে হলে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ছোট ছোট বিষয়ে মতের অমিল থাকলে তা নিজেরা বসে মিটিয়ে ফেলুন। চা দোকানে বসে দলের একজন নেতা আরেকজন নেতার বিরুদ্ধে কথা বলবেন, সেটা আমাদের জন্য সম্মানের নয়। সেটা আওয়ামী লীগের মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ন করে। ঘরের বিবাদ ঘরে বসেই মিটিয়ে ফেলুন। দলের ত্যাগী নিবেদিত কর্মীদের মূল্যায়ন করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দলের প্রাণ হচ্ছে নিবেদিত কর্মী বাহিনী। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। দলীয় নেতাকর্মীদের বলবো, নিজের অবস্থান ভারি করার জন্য ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে নিজের লোক দিয়ে কমিটি করা যাবে না। করা যাবে না কোনও পকেট কমিটি। দলকে শক্তিশালী করতে হলে নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের দিয়ে সংগঠন করতে হবে। চিহ্নিত অপরাধী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, চিহ্নিত দখলদার, চিহ্নিত মাদকসেবী, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, চিহ্নিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, নারী নির্যাতনকারী, বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলে আনা যাবে না। শুধু তাই না। ধর্ষক, ধর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এদের শুধু রাজনৈতিক প্রশ্রয়ই-আশ্রয়ই বন্ধ নয়, এসব ঘৃণ্য অপরাধীদের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বলেন, সম্প্রতি দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে দলের সাংগঠিনক কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর প্রথমে গাজীপুর, পরে মানিকগঞ্জে দুটি বর্ধিত সভায় যোগ দিয়েছি। এভাবে অন্যান্য জেলা-উপজেলায় সম্মেলন করা হবে। তিনি বলেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ, সংগঠননের কোথাও কোনও কলহ বা দ্বন্দ্ব থাকলে অবিলম্বে তা দূর করতে হবে। দলকে করতে হবে শক্তিশালী। জেলা থেকে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলাই হবে জেলা আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য। কাদের আরও বলেন, ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। দুঃসময়ে তারাই দলের পাশে থাকে সুসময়ের কোকিলরা তখন সটকে পড়ে। তাই ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের সফলতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাবিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে। তিনি আছেন বলেই এই অবস্থাকে মোকাবিলা করতে পেরেছেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে আজ আমরা অনেকটা করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী এনামুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার আবুল প্রমুখ।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজাদ কাশ্মীরে বিক্ষোভ, নিহত ৪

বিএনপি ইসরায়েল-নেতানিয়াহুর দোসর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী